ছদ্মনামের আড়ালে আসল নামটিই হারিয়ে গেছে তার

শাহ মতিন টিপু

ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের ৫০ তম প্রয়াণ দিবস। বাংলাদেশের অনেক পাঠকের কাছেই ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় নামটি পরিচিত। কারণ, তার রচিত অন্যতম এবং বহুপঠিত দুটি উপন্যাস চিতা বহ্নিমান ও শাপমোচন। এ দুটি উপন্যাস পড়া হয়নি এমন পাঠক বিরল।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফাল্গুনী তার ছদ্মনাম। আসল নাম তারাদাস মুখোপাধ্যায়। লেখক হিসেবে খ্যাতির কারণে ছদ্মনামের আড়ালে আসল নামটিই হারিয়ে গেছে তার।

খ্যাতনামা এই বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিকের জন্ম ১৯০৪ সালের ৭ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা গ্রামে। হেতমপুর কলেজে আই.এ. পড়ার সময়ই রাজরোষে পড়েন। পরে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন।

তার নামে ২০০৭ সালে এই গ্রামের একটি পাড়ার নামকরণ করা হয় ‘ফাল্গুনী পল্লি’। ফাল্গুনীর শেষ জীবনটা কেটেছে নাকড়াকোন্দা গ্রামে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ও জোতিষ চর্চা করে। ১৯৭৫ সালের ২৫ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

ফাল্গুনীর একমাত্র মেয়ে অচিরার নাম রেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার বিয়ে হয়েছিল কলকাতায়। তিনিও প্রয়াত হয়েছেন।

ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় বঙ্গলক্ষ্মী নামে একটি মাসিকপত্রের সম্পাদক ছিলেন। সেখান থেকেই তার সাহিত্য জীবন শুরু হয়। ১৯৫৫ সালে শাপমোচন উপন্যাস অবলম্বনে পরিচালক সুধীর মুখার্জি উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেন জুটিকে নিয়ে একই নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

তার অন্যান্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে আকাশ বনানী জাগে(১৯৪৩), আশার ছলনে ভুলি (১৯৫০), ‘বহ্নিকন্যা’(১৯৫১), ‘ভাগীরথী বহে ধীরে’(১৯৫১), ‘মন ও ময়ূরী’ (১৯৫২), ‘জলে জাগে ঢেউ’(১৯৫৪), ‘মীরার বধূয়া’(১৯৫৬), ‘স্বাক্ষর’(১৯৫৭), ‘চরণ দিলাম রাঙায়ে’(১৯৬৬) উল্লেখযোগ্য।

এছাড়া প্রকাশিত হয় তার রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থ হিঙ্গুল নদীর কূলে(১৯৩৫) ও কাশবনের কন্যা(১৯৩৮)। শিশু সাহিত্য/ গোয়েন্দা উপন্যাস ‘পাতালের পাকচক্র’, ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’, ‘কালো রুমাল’।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts