রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ‍এর ‍একান্ত কথাবার্তা

বিডি মেট্রোনিউজ ডেস্ক ।। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ লাখ লাখ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার এবং স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি থেকে মুক্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি স্বাধীনতার পয়তাল্লিশতম দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বাসসকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের মানুষের কাছে আমার প্রত্যাশা তারা মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাস জানবেন। স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃতি থেকে তারা মুক্ত হবে। তাদের মধ্যে আদর্শ-নীতি থাকবে। তারা আদর্শবান হলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত উজ্জ্বল।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্কুলে যখন পড়ি তখন থেকে ছাত্রলীগে যোগ দান করি, ১৯৫৯ সালে। ৬১ সালে মেট্রিক পাস করে কলেজে ভর্তি হই, আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন করি। ৬২তে শিক্ষা আন্দোলন করি। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলাম, নেতৃত্বে ছিলাম। পরে ১৯৬৬ সালে যখন বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দিলেন। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা দিছে যে, সেখানে স্বাধীনতার ঘোষণার কথা বলে নাই। কিন্তু ছয় দফাটা এমনই একটা অবস্থা ছিলো… ছয় দফা প্রস্তাবটা মেনে নেয়া মানে… স্বায়ত্তশাসনের কথা যদিও বলা আছে, অনেকাংশে এটা স্বাধীনতার মত হয়ে যেত।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আমরা বক্তৃতা যখন দিছি, ছয় দফা মেনে নিতে হবে, নাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে কথা নেই। না হলে একদফায় যেতে হবে। এ ধরনের কথা আমরা ছাত্ররা বলছি, আওয়ামী লীগ তখন বলে নাই। আমরা ছাত্ররা বরং একধাপ আগায়া বলছি, ছয় দফা না মানলে একদফা হয়ে যাবে। একদফাতো বুঝেনই, স্বাধীনতা। এটা কিন্তু ৬৬ সাল থেকেই আমরা ছাত্র জনসভায় বলছি। এরমধ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা গেল, বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য আমরা আন্দোলন করলাম। ১১ দফা হলো। বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করলাম। এসব ইতিহাস সবই জানেন। ৭০ সালের নির্বাচনে আমাকেও বঙ্গবন্ধু নোমিনেশন দিল। ছয় দফার পরে কিন্তু আমাদের মেন্টাল প্রস্তুতি ছিলো। বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা মামলা দিয়ে যে অবস্থায় ফেলছে… আমাদের তখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা কিশোরগঞ্জ ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিকে কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা কিছুটা ইঙ্গিত দিছে। এ কারণে খালি আমি না অনেক ছাত্রনেতাই বক্তৃতায় বলছে, ছয় দফা মানো, না হয় এক দফা। ছাত্ররা বলছে, নট দি আওয়ামী লীগ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম পরিচয় পরিচয়টা ১৯৬৪ সালে। ছাত্র রাজনীতি করি। ১৯৬৪ সালে বঙ্গবন্ধু যখন কিশোরগঞ্জে গেল, আওয়ামী লীগকে রিভাইভ করার জন্য। তখন আমরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলাম । আমরা বললাম, আমরা কিছু নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে চাই। তারা বললো, না ছাত্রদের দেওয়া যাবে না। সিনেমা হলের মধ্যে একটা মিটিং হয়েছিলো। এখনকার অবস্থাতো তখন ছিলো না। যখন আওয়ামী লীগের মুরুব্বিরা বলছে, তোমরা আসতে পারবে না। এটা সিদ্ধান্তের বাইরে। এখন হলেতো হুড়মুড় করে ঢুকে পড়তো। তখন আমরা ঢুকি নাই। তবে এর প্রতিবাদের দুই-আড়াইশ’ ছাত্র নিয়ে বাইরে অবস্থান নিলাম। বঙ্গবন্ধু যখন বের হয়ে আসলো… যেহেতু আমি কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। আমি আগায়া গিয়া সালাম দিয়া বললাম, আমরাতো আপনার বক্তব্য শুনতে চাইলাম। যাইবার দিলো না। হল অনেকটা খালি রইলো। উনি তখন আমার পিঠ চাপড়ায়া বললো, আরে তোমাদের নিয়েই আমার সব। তোমাদেরই সবকিছু করতে হবে। কাজ করে যাও। এ ধরনের ইন্সপারেশন দিয়া অনেক কথা বললেন। এই হলো উনার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা। দাঁড়িয়ে থেকেই ১৫-২০ মিনিট আলাপ করছি। তখন ছাত্ররা সব পিছনেই ছিলো। সবারই, সাসনে যারা ছিলো মাথায় হাত দিছে। খুব আপন করে নিছে। ওই সাক্ষাতে আমরা সবাই খুব ইমপ্রেসড হয়েছিলাম। ছাত্রলীগ যে করি, উনার আদর্শ নিয়ে যে রাজনীতি করি, এর একটা আত্মতৃপ্তি পেলাম।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আগরতলা মামলা থেকে বের হওয়ার পর আমি ৩২ নম্বর গিয়ে উনার সঙ্গে দেখা করছি। আবার ৭০ সালের জানুয়ারি মাসে কিশোরগঞ্জে একটা জনসভা দিলাম। তখন আমি ছাত্রলীগের সভাপতি না। বলি আওয়ামী লীগ করি কিন্তু ওয়ার্কিং কমিটিতে নাই। কিন্তু ছাত্রসংগঠন পুরোটাই আমি নিয়ন্ত্রণ করি। ওই জনসভার আগে কিশোরগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী লীগ একটা মিটিং করলো। জনসভার জন্য অভ্যর্থনা কমিটি করা হলো। আওয়ামী লীগের সভাপতিকে চেয়ারম্যান করা হলো। আমাকে করলো সদস্য সচিব। বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ হলো। বঙ্গবন্ধু শুনলেন। ওই মিটিংয়ের মাসখানেক পর আমি আবার ঢাকা গেলাম। ৩২ নম্বরে গেলাম। হঠাৎ উনি (বঙ্গবন্ধু) বলে বসলেন‘হামিদ তোকেতো ইলেকশন করতে হবে।’ আমি তখন ছাত্র রাজনীতি করি। ইলেকশন হবে জানি কিন্তু আমি যে প্রার্থী হব এসব মাথায় ছিলো না। … পরে বাড়ি গিয়ে আমার বাবারে বললাম। প্রথমে উনি রাজি হলেন না তবে পারে রাজি হলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ’৭০ এর নির্বাচনে যখন নির্বাচিত হলাম, ৩রা জানুয়ারি খুব সম্ভব। সকল এমপিএ ও এমএনএ মানে প্রাদেশিক পরিষদ আর জাতীয় পরিষদের সকল সদস্যকে ঢাকার রেসকোর্স ময়াদানে শপথ হলো। মানে ছয় দফার সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করবো না। জনগণের কথা এইসব…। চলে গেলাম কিশোরগঞ্জ। অধিবেশন ডাকলো মার্চের ৩ তারিখ। অধিবেশন ডাকছে যখন ঢাকা আসছি। ন্যাশনাল এসেম্বলি মেম্বার যে, তার কার্ড নিলাম। বর্তমান যে প্রধানমন্ত্রীর অফিস সেটা পার্লামেন্ট ছিলো, সেখান থেকে কার্ড নিলাম। এমএনএ হোস্টেলে সিট নিছি। তিন-চারদিন ছিলাম। এরমধ্যে… আমি তখন বায়তুল মোকাররমের এদিকে কী যেন কেনা-কাটা করতে আসছিলাম। এরমধ্যে ইয়াহিয়া খান ভাষণ দিলো দুপুর একটার দিকে। বললো ৩ তারিখ অধিবেশন বন্ধ। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কিছু কথা বললো। পাকিস্তান থেকেও কিন্তু এমএনএ মেম্বার আসছিলো। টু এটেন্ড দ্যা পার্লামেন্ট ১০-১২ জন এসে পড়েছিলো। পরপরই ঠিক দুইটা কী তিনটা মনে নাই, এক তারিখ… হোটেল পূর্বাণীতে বঙ্গবন্ধু এমএনএদের ডাকলো। প্রেস কনফারেন্স। এরমধ্যে সারা ঢাকা শহরে লাঠি-সোটা, যার যা হাতে ছিলো মিছিল বের হয়ে গেল। মানুষ বের হয়ে পড়লো। সেখানে গেলাম। কথা-বার্তা বললো। ইনডিভিজুয়ালি অনেককে অনেক কথা বললো।

আমি যখন সামনে পড়লাম। আমারে বললো, ‘এই হামিদ এদিকে আস। তুমি আজকেই চলে যাও কিশোরগঞ্জ। আন্দোলন করতে হবে।’ বলার পরে বললাম, আজকে তো ট্রেন.. । বললেন, ‘না আজকেই যেতে হবে। চেষ্টা করো। কালকে যেতে গেলে অসুবিধা হতে পারে। আজকেই চলে যাও। ‘পরে আমি রাতে চিটাগং মেইল ট্রেনে গেলাম, সাড়ে দশটার দিকে ছাড়ে। হ্যান্ডেল ধরে গেলাম ভাবলাম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে গেলে উঠতে পারবো। এভাবে ধরে ঘোড়াশাল ফ্ল্যাগ পর্যন্ত গেলাম। জীবন আর বাঁচে না। পরে জানালা খুলছে তখন জানালা দিয়ে ভিতরে গেলাম। পরে ভৈরবে গেলাম। ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ। পরেতো আন্দোলন সংগ্রাম চললো। পরে ১৭ মার্চ কিশোরগঞ্জের রথখোলা মাঠে এক জনসভায় পাকিস্তানের পতাকা নামায়া বাংলাদেশের পতাকা তুললাম।

৭-ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি ওইদিন ঢাকায় আসি নাই। ওয়েট করছিলাম, রেডিওতে সরাসরি শুনবো। কিন্তু রেডিওতে দেয় নাই। সন্ধ্যার পরে কলকাতা থেকে দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায় এবং বিবিসি থেকে আমরা শুনলাম কী বলেছে। ফলোয়িং ডে’তে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ পূর্ব পাকিস্তান রেডিও পুরোটাই বাজাইছে। ওই বক্তৃতায় কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলছে, ‘এখন থেকে আমার কথাই মানতে হবে।’ তখন পাকিস্তান রেডিওর নিউজ কেউ অথেনটিক মনে করতো না। বিবিসি মানুষ খুব বিশ্বাস করতো। কলকাতা থেকে যেটা বলতো সেটা শুনতো। দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়তো যাদুকরি কন্ঠে নিউজ পড়তো। ৭ মার্চের পরেই ক্লিয়ার যে, আমরা ওই পথে চলে যাচ্ছি। আর কোন রাখঢাক থাকছে না। ১৭ মার্চ পতাকা তুললাম, ২৫ মার্চের কথাতো জানেনই। এরমধ্যে এভরিডে, এভরিডে, প্রোগ্রাম ছাড়া কোন কথা নেই। পুরো বাংলাদেশ তার কথায় চলছে।

স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি যেহেতু এমএনএ ছিলাম। ২৫ তারিখের পরে আমি কিন্তু…আই রিসিভড এ টেলিগ্রাম। বঙ্গবন্ধু টেলিগ্রাম পাঠাইছে। আমরা স্বাধীনতা ঘোষণা করলাম। আমরা, একটা বাঙালি বেঁচে থাকতে লড়াই ছাড়বো না। এ লড়াইয়ে জিততে হবে। এ ধরনের কথা-বার্তা মোটামুটি বাংলাতে একটা মেসেজ পাঠাইছিলো। ওইটা আমার কাছে ছিলো অনেকদিন। এখন খুঁজলে পাবো কীনা জানি না। এমএনএরা পেয়েছিলো। এটা পাবার পর … যুদ্ধ সম্পর্কেতো অভিজ্ঞতা ছিলো না। দা-লাঠি-রামদা-তলোয়ার কামাররে দিয়া অর্ডার দিলাম। ৫০-৬০টা রামদা, তলোয়ার বানাইছি। আর মলোটোভ ককটেল যেটা আছে না। বোতলের ভিতরে পেট্রোল ভরে সুতলি দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিছি। এইগুলা পাঁচ-সাতশ’ বানাইছি। ভাবছি পাক আর্মি আসলে বিল্ডিংয়ের উপর থেকে আক্রমণ করবো। এর মধ্যে একজন ক্যাপ্টেন ছিলো, জাহাঙ্গীর। সে কিশোরগঞ্জ আসলো। সে থাকতে থাকতে আসলো সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলো যে, তখন মেজর ছিলো। মেজর শফিউল্লাহ। আমরা আজিমুদ্দিন স্কুলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করলাম।

রাষ্ট্রপতি বলেন,  মার্চ মাস চলে গেল। এপ্রিলের ৬-৭ তারিখে বললো… কিশোরগঞ্জে যে একটাই ব্যাংক আছে। ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। কিশোরগঞ্জে একটা, বাজিতপুরে একটা আর ভৈরব বাজার একটা ব্রাঞ্চ ছিলো। তিনটা ব্রাঞ্চে ১১ কোটি ৭৮ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা। বড় বড় নোট নিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাইতে বললো। বললো- সেখানে লিবারেটেড জোন থাকবে। এখানে পতন হলেও ওখানে স্বাধীনতা রাখতে পারবো। বললো ওখানে টাকার দরকার আছে নিয়ে যেতে হবে। আমরা নাও করতে পারছি না, হ্যাঁও করতে পারতেছি না। কিছুটা সন্দেহ করতেছি, এইটা নিয়া না জানি আবার কোন লুটপাট হয়ে যায়। তখন তারা বললো, এমপিএ-এমএনএর মধ্যে যে কোন দুইজন যেতে হবে। কিন্তু কেউই রাজি না। তখন ওই আমির অফিসার বললো, কী আপনার সাহস পাচ্ছেন না। এ ধরনের কথা বললো। পরে আমি প্রতিবাদ করে বললাম, না আমি যাব। আমরা যে ভয় পাই না, এটা প্রমাণ করার জন্য যেতে হবে। আমার সঙ্গে একটা ছেলে ছিলো সাগীর। মুক্তিযোদ্ধা, সেও সঙ্গে গেল। একটা টুটুবোর রাইফেল আর ব্যাগ নিয়া গেলাম। টাকা নিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যাংকে জমা দিলাম। পরে আর্মিরা তাদের পথে গেল, আমি আলাদা হয়ে গেলাম।

৮ তারিখে আমি জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে থাকলাম। এরমধ্যে একটা খবর পাইলাম। আলী আজম সাহেব ছিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, এমএনএ । তিনি বললো, চিটাগং, কুমিল্লা, নোয়াখালীরও কিছু আছে। এরা সব গেছে আগরতলা। আলী আজম সাহেব বললো, আপনি যান, আমি কাল আসবো। আমি গেলাম। কিন্তু যাওয়ারতো কোন রাস্তা নাই। মাঝে মাঝে দুইটা কামরা নিয়া একটা ইঞ্জিন যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আখাউড়া। এভাবে গেলাম। আখাউড়া রাতে থেকে, রিকসা, হাইট্টা গেলাম আগরতলা। চিনি না কিছুই। পরে খুঁইজা বাইর করলাম। দেখলাম ৩৬ জন এমএনএ-এমপিএ উপস্থিত। এরমধ্যে পরিচিতদের মধ্যে ছিলো… খন্দকার মোশতাক ছিলো (একুট হেসে), চিটাগংয়ের এম আর সিদ্দিকী ছিলো, জহুর আহম্মদ চৌধুরী ছিলো, মালেক উকিল তখনও আসে নাই। শুনছি তিনি আসবে। বানিয়াচং, আজমীরিগঞ্জের এমএনএ আব্দুর রব… চৌধুরী কীনা মনে নেই। সে আবার লে.কর্নেল না কর্নেল ছিলো, রিটায়ার আর কী। তো এই ধরণের আমরা ছিলাম। ওখানে বাংলাদেশের গভর্নমেন্ট কী ধরণের হবে সেটা আলাপ হলো। বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করা হবে, উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। যেহেতু বঙ্গবন্ধু নাই সে কারণে তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। আর তাজউদ্দীন সাহেব প্রাইম মিনিস্টার। এই পর্যন্তই আলাপ হইছে। মিনিস্টার কে হবে, এগুলো ফারদার হয়তো ওরা কলকাতায় আলাপ করেছে। ওখানে এই পর্যন্তই আলাপ হইছে। ১৪ তারিখ ব্যাক করলাম। হ্যাঁ ১৪ তারিখ। আসার সময় বসে আছি। ওই ইঞ্জিনের গাড়িতে করে গেলাম। হোটেল খাওয়া-দাওয়া করে ১৫ তারিখ ভৈরব যাব। হোটেলে খাইতাছি এর মধ্যে শেলিং শুরু হয়ে গেছে। দৌড়াদৌড়ি লাগছে, আগুন জ্বলতাছে। পরে আমরাও সরাইলের দিকে গেলাম। ওখান থেকে যাওয়ার কোন সুবিধা নেই। ওখান থেকে ব্যাক করে আবার আশুগঞ্জের দিকে। রিকসার ব্যবস্থা নেই। হেঁটেই যাওয়া ধরলাম। আশুগঞ্জে রাতে এক গদি ঘরে রইলাম। ব্যবসায়ীদের গদি ঘর। আবার বাবা ব্যবসায়ী ছিলো, ধান-চালের ব্যবসা ছিলো। কিছু লোক চিনেও। ঘুম থেকে উঠি নাই। শুরু হয়ে গেছে শেলিং। নদীর পাড় দিয়ে দৌঁড় দিলাম। ১৬ তারিখ এটা। আজবপুর বলে একটা জায়গায় ৫-৬ জন ইপিআর পাইলাম। রাইফেল আছে আর একটা এলএমজি। ওই যে ছিদ্র থাকে। (একটু হেসে) এই এলএমজি দেইখ্যা একটু সাহস পাইলাম। শেলিং হচ্ছে। হেলিকপ্টার দিয়ে ফোর্স নামাইতেছে। ভৈরব এর আগেই দখল করে ফেলছে। আজবপুরে শেলিং করে নাই। একটা প্লেন গেছে। দেখে কইলাম, (ইপিআরদের) আপনারা প্লেন ফালাইতে পারেন না। পরে রাইফেল দিয়ে গুলি করছে। কী হবে, না হবে, জানি না। আর স্টেনগান দিয়া আরও গুলি করছে। পরেতো জানলাম মাত্র ৫০ গজ যায় (আবারো হাসি)। এইডা দিয়ে কী দিব। যাহোক পরে ওখানেও শেলিং করলো। পালাইলাম… রাতে পানিশ্বরের দিকে একটা গ্রামে ছিলাম। ১৭ তারিখ হেঁটে অষ্টগ্রাম গেলাম। ১৮ তারিখ থাকলাম। আমার নির্বাচনী এলাকা। দলের নেতা-কর্মীরাও আছে। ওরা বললো- কী করবো বলে যান। থেকে গেলাম।

১৯ তারিখ সকালে শুনলাম আর্মি ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ যাবে। হাঁটা ধরলাম। জমির আইলের উপর দিয়ে। মিঠামইন যখন গেলাম, তখন বিকাল হয়ে গেছে। পৌঁছে শুনলাম আর্মি যশোদল আসছে। এটা কিশোরগঞ্জ থেকে ৩-৪ মাইল দুর। অর্থাৎ মিঠামইন থাকতেই কিশোরগঞ্জ ফল করছে। আমারতো প্ল্যান ছিলো, একদিন থেকে কিশোরগঞ্জ যাব। আর যাওয়া হইছে না। যেহেতু আমি বাড়িতে গেছি, লোকজন শঙ্কিত। এখানে না আর্মি আসে। এরমধ্যে ২৫ কী ২৬ তারিখ আমাদের গ্রামের বাড়িতে ফাইটার দিয়ে শেলিং করলো। তখন এলাকার ময়-মুরুব্বীরা বললো, বাবা তুমি থাকলে পাক আর্মি আইবোই। ইন্ডিয়া যাও গা। আমি বললাম আমিতো ইন্ডিয়া থেকে আসছি। দেশের কী হবে। ফাদারও বললো, এখানে থাকা ঠিক হবে না। (হেসে উঠে ) আমি আর বিদায় দেব কী, তারাই আমারে বিদায় দেয়। এরমধ্যে কিছু ছেলেপেলে খবর দিয়ে আনলাম। ২৮ তারিখ কী ২৯ তারিখ হবে… ২৮ই। আমি গেলাম ইটনা। ফজলুর (ফজলুল রহমান সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা। পরে গণফোরাম হয়ে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ করে বিএনপি নেতা) বাড়ি জয়সিদ্ধি ৩০ তারিখ থাকলাম। ৩১ তারিখ… আমার সঙ্গে আরও সাত জন ছিলো, ওই ছেলে সাগীরও ছিলো। ১লা মে, আমার ইচ্ছা ছিলো আগরতলা যাব। ভৈরব দিয়েতো সম্ভব হচ্ছে না। ভাবলাম আজমিরী দিয়া বানিয়চং হয়ে হবিগঞ্জ দিয়ে চলে যাব আর কী।

১ তারিখ বানিয়াচংয়ের কাছে যাওয়ার পর শুনি, নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর। পরে শুনলাম পাক আর্মি আসতেছে। একটা গ্রামে থেকে পরের দিন আজমিরী গেলাম। পরের দিনে আরেক গ্রাম থেকে নৌকা নিয়া রওনা দিলাম। তিন দিন নৌকায়… গেলাম তাহিরপুর। তাহিরপুর থেকে হেঁটে টেহেরহাট গেলাম। এমপিএ জহুর সাহেবের ওখানে গিয়া খাইলাম, ঘুমইলাম। তিন দিন খাওয়া-দাওয়া নাই। পরে ৩৪ মাইল হেঁটে গেলাম বালাট (ভারত)।

ওখানে যখন গেলাম। সুনামগঞ্জের এমপিএরা ছিলো। বিভিন্ন ধরণের বাসা-বাড়ি আছে যে তারা ম্যানেজ করছে। আমার গিয়ে থাকার জায়গা নেই। এক খাসিয়া চার দোকানে গিয়ে চা খাইলাম। সেখানে অর্ডার দিয়া রান্না করাইয়া খাইলাম। প্রথমদিন বাজারের মাচায় ছিলাম। দুই দিন পর ওই দোকানে গিয়ে বললাম। আমরা রাতে থাকবো। তালা মাইরো না। তখন ওখানেই লুঙ্গি বিছায়া থাকলাম, মাটির উপর। আমিতো একটু লেট রাইজার। ওরা দোকান খুলে ঝাড়ু দিত আর আমারে বাড়ি দিত ‘এই বাঙ্গাল উঠ’। এভাবে ৭-৮ দিন থাকার পর একজন সাব-এসিস্টট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এসপি চৌধুরীর বাসায় গেলাম। চা খেতে। বেশি কিছু চাওয়ার সাহস পাইলাম না। উনার বাসার বারান্দায় থাকার কথা বললাম। উনি রাজি হলেন। আমার সঙ্গে কিন্তু ১০-১২ জন। পরে খাতির হওয়ায় তিনি আমাকে একটা রুম দিলেন। দেখা গেলো কিছুদিন পর ওই ভদ্রলোকের থাকলো একটা রুম আর পুরো বাড়িতে আমরা। মে মাসের ১০-১৫ তারিখ পর্যন্ত শুধু শরণার্থী আসছে। আর কেউ না মানে, মুক্তিযুদ্ধে যে যাবে এমন আরকি। আর যাবে যে তার কোন ইয়ে নাই। তো আমি শিলং গেলাম। সেখানে গর্জিয়াস একটা বাংলো। সেখানে দেখলাম মীর শওকত আলী, সে তখন লে.কর্নেল (৫ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার)। আমি গিয়ে পরিচয় হলাম। যুদ্ধের কথা জিজ্ঞেস করলাম। তো কয়, আপনারা সিভিলিয়ান। যুদ্ধের বিষয় আমাদের। আমি বললাম, সিভিলিয়ান সহযোগিতা ছাড়া যুদ্ধ করবেন কেমনে? কী আলাপ করেন এইগুলা। মুক্তিযোদ্ধ কোথায় নেওয়া হচ্ছে, কী বিষয় কিছুই জানি না। বলেন কী হচ্ছে। … জোনাল একটা কমিটি ছিলো। দেওয়ান ফরিদ গাজী সেটার চেয়ারম্যান। আর আমরা এমপিএ-এমএনএ যারাই যাই তারা সদস্য। অনেকেই ছিলো। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিল। শিলংয়েই একটা মিটিং হলো। আলাপ-আলাচনা হলো। সেখানে কথা হলো-একটা ইয়ুথ ক্যাম্প করতে হবে। সেখানে রাখা হবে। আর একটা ইয়ুথ রিসিপশন ক্যাম্প করতে হবে। এই রিসিপশন ক্যাম্প করলাম মইলাম, এটা বালাটের অপর পাড়। এটা করার পর আবার অন্য উৎপাত শুরু হলো।

বাঙালিরা যে এভাবে আসছে খাসিয়ারা সেটা সহজভাবে নিচ্ছে না। তারা মনে করছে আমরা বুঝি আর ফিরবো না। এদিকে কিছু মুক্তিযোদ্ধা কিছু আসছে। তো প্রায় এক-দেড়শ’ ছেলে আসলো। পরে তাদের ট্রেনিংয়ের জন্য ক্যাম্পে পাঠানো হলো। আমি ট্রাকে তুলে দিয়েছিলাম। বালাট থেকে ১০ কিলোমিটার আপে একটা ক্যাম্প করা হলো। এর মধ্যে রাজ্জাক সাহেবের (প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক) সঙ্গে আমার দেখা হলো। সৈয়দ আহাম্মদ সাহেব আসলেন। পরে বিএলএফ নিয়ে আলাপ হলো। যারা পলিটিক্রালি মোটিভেটেড তাদের আমি বিএলএফ এ রাখছি। ছাত্রলীগের নেতা যারা। তাদের রিসিপশন ক্যাম্প ছিলো বালাট। দুটি ক্যাম্পের আমি চেয়ারম্যান ছিলাম। তখন থেকে ডাইরেক্ট পাঠানো হতো। পরে তালিকা করে ট্রেনিংয়ে জন্য পাঠাতো হতো। প্রথম আমি নেত্রকোনা-সিলেট-হবিগঞ্জ এর সাব সেক্টরে ছিলাম। পরে এটারে ভাগ করে ময়মনসিংহ আর নেত্রকোনা একটা দিলো। সুনামগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ ছিলো আরেকটা, এটার সাব-সেক্টার কমান্ডার ছিলাম আমি। এখান থেকে টান্ডুয়া আর হাফলং ট্রেনিংয়ে পাঠাতাম। বিএলএফ’র যারা ট্রেনিং নিত, আমার দায়িত্ব ছিলো এদের ডাইরেক্ট ইনডাক্ট করা। আমর্স-অ্যামুনেশন যা আছে…। অন্য যারা মুক্তিযোদ্ধ ছিলো তাদের আমি ট্রেনিংয়ে পাঠাতাম তাদের ইন্ডাকশানের দায়িত্ব আমার ছিলো না। এটা সেক্টর কমান্ডাররা করতো। আমাদের ছিলো ৫ নম্বর সেক্টর, দায়িত্বে মীর শওকত আলী।

রাষ্ট্রপতি বলেন,আমার নিজের ট্রেনিং ছিলো, মাত্র দুই দিনের। আসামের গুয়াহাটির কাছে একটা ক্যান্টমেন্টে নিয়ে গিয়ে দ্ইুদিন শুধু পিস্তলে গুলি করা শিখাইছে। একমাস কোথাও গিয়ে ট্রেনিং করার আমার অবস্থা ছিলো না। আই এম অরগানাইজিং… না থাকলে শেষ হয়ে যাবে। আমার অস্ত্র ছিলো ৩৮ বোরের একটা রিভলবার। যখন আমি বাংলাদেশের ভিতরে ইন্ডাক্ট করতাম, তখন ৫-৭ মাইল ভিতরে ঢুকেও করেছি।

১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্ম-সমর্পন সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ইন্ডিয়া যখন রিকগনিশন দিলো। তখন আমরা আশাবাদী হলাম যে, এর একটা এসপার-ওসপার হয়ে যাবে। বেশিদিন কন্টিনিউ করবে না। ১৬ ডিসেম্বর আত্ম-সমর্পণের ঘটনা আমরা পেতে পেতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো। ওয়ারলেস ম্যাসেজ পেয়েছিলাম বাট উই আর ইন কনফিউশান। সন্ধ্যায় খবর শোনার পর নিশ্চিত হলাম। ওখানে যারা এমপিএন-এমএনএ ছিলাম এমনকি ইন্ডিয়ার যেসব আর্মি অফিসার ছিলো তাদের সবার মধ্যে একটা আনন্দঘন পরিবেশ। দেশে আসবো এ ধরণের চিন্তা-ভাবনা শুরু হইছে। অনেকে ফেরা শুর করেছ। কিন্তু আমার জন্য সমস্যা হচ্ছে, বলাটে ২-৩ লাখ শরনার্থী, মইলামে অন্তত ৭-৮ লাখ শরানার্থী ছিলো। সেখানে করুণ চিত্র ছিলো। তাদের লুক-আফটার করতে হতো। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মইলামে শরনার্থী শিবিরে গিয়ে একটা জনসভা করলাম। বাট দে আর নট ইন্টরেস্টেড টু কাম ব্যাক বাংলাদেশ। ভাবছে কী হবে না হবে। শঙ্কিত ছিলো। আশে পাশের সব ক্যাম্পে গিয়েছি। তাদের বলেছি আমি ফিরছি তোমরাও চলো। আমার ফ্যামিলিও তখন অসুস্থ ছিলো। আমার ফাদারও নভেম্বরে দেশে ফিরছে। নভেম্বরেই মারা গেছে। হি ওয়াজ টর্চার্ড বাই রাজাকারস’। সবাইকে দেশে পাঠিয়ে আমি ৮ তারিখ বা ৭ তারিখ… হ্যাঁ ৭ তারিখ রওনা দিলাম। ১০ তারিখ এলাকায় পৌঁছালাম। বঙ্গবন্ধুও সেদিন দেশে ফিরেছিলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় আর ৭০ এর নির্বাচনের সময় এ সার্টেন পার্সেন্টেজ অব পিপল এর বিরোধিতা করেছে। পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখতেও কাজ করেছে। ন্যাক্কারজনক কাজ যেটা করছে, পরাজয়ের প্রাক্কালে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষিত লোক, স্কলারদের ধরে ধরে নিয়ে মেরে ফেলছে। পাক আর্মিতো তাদের চিনতো না। যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে তারাই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করে এদের হত্যা করেছে। যাতে দেশ সমৃদ্ধ হতে না পারে। এ চক্রান্ত এখনও আছে। এই ভাবধারা যে চলে গেছে এমন না।

মনে থাকার কথা, যখন পাকিস্তান আমাদের স্বীকৃতি দিল, বঙ্গবন্ধু থাকা অবস্থায় জুলফিকার আলী ভুট্টো এখানে আসলো। তখন প্ল্যান করে ভুট্টোকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য রাস্তার দুই ধারে লোক ছিলো। সেখানেও একটা চক্র কাজ করছে। বিভিন্নভাবে এ চক্র কাজ করে যাচ্ছে। আমি আশাবাদী যে, একটা স্বাধীন দেশের মানুষ প্রকৃত বাস্তবতা বুঝছে। তাদের বুঝতে হবে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কী, আমাদের নৈতিক অবক্ষয় মারাত্মক আকারে দেখা দিছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিছে, না পরে তার পক্ষে কেউ ঘোষণা দিছে, এটা বললে হবে না। বলতে হবে ইন্টারনালি ১৯৫২ সালেই কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু ছয় দফার পরে কিন্তু ক্লিয়ার হয়ে গেছে অবস্থা কোন দিকে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে  আমার প্রত্যাশা একটাই-স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তারা জানুক। স্বাধীনতার ইতিহাসের বিকৃতি থেকে তারা মুক্ত হবে এবং তাদের মধ্যে আদর্শ-নীতি থাকতে হবে। ন্যায় থাকতে হবে। যারা ইতিহাস বিকৃতি করে তাদের হাত থেকে মুক্ত থাকতে পারলে দেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, নিঃসন্দেহে।
প্রশ্ন- মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন। যখন জানতে পারলেন তখন কেমন লেগেছিলো…
রাষ্ট্রপতি- আসলে স্বীকৃতি একটা আনন্দের বিষয়। (একটু নড়ে-চড়ে বসে) একটা কথা বলতে পারি, শুরু থেকে রাজনীতি আর মুক্তিযুদ্ধের সময় একটা ঐকান্তিকতা, একাগ্রতা… যেকোন মূল্যে দেশ স্বাধীন করতে হবে। এ ধরণের একটা প্রত্যয় ছিলে। শপথের মতো ছিলো… করতেই হবে। বাঁচি-মরি করতে হবে। না খেয়ে পথে ছিলাম কিন্তু কোন দিন মনের ভিতর দূর্বলতা আনি নাই। চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts