বিডি মেট্রোনিউজ || ঢাকার মিরপুরে শাহ আলী থানাধীন এলাকায় এক নম্বর সেকশনের একটি ছয়তলা ভবন ঘিরে রেখে সন্দেহভাজন জেএমবি সদস্যদের এক আস্তানায় দীর্ঘ সময় ধরে অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে এই অভিযানে ‘বিপুল পরিমাণ’ বিস্ফোরক এবং কয়েকটি ‘সুইসাইড ভেস্ট’ পাওয়া গেছে। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনটির অন্তত তিনজন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ সদস্যসহ মোট সাতজনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) জাহাঙ্গীর আলম জানান, আগের রাতে এক জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাহ আলী থানার ৯ নম্বর রোডের ‘এ’ ব্লকের ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
পুলিশের সঙ্গে র্যাব ও সোয়াট ইউনিটের সদস্যরা এ অভিযানে অংশ নেন। ওই বাড়ির ছয় তলার একটি ফ্ল্যাটে এক ডজনের বেশি ‘হাতে তৈরি গ্রেনেড’ পাওয়ার পর পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্যরা পাশের একটি খালি জায়গায় সেগুলো নিষ্ক্রিয় করেন।
দুপুরেও ভবনটির বাইরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও আইনশৃঙ্খল বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যকে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ভবনের ভেতর থেকে গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে জানালার কাচ ভেঙে যায়। জবাবে পুলিশও গুলি করতে বাধ্য হয়।”
ভবনের অন্য বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরই সেখানে অভিযান চালানো হয় বলে জানান তিনি। আটকদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ এর মধ্যে জানিয়ে তিনি মনিরুল বলেন, “এদের মধ্যে অন্তত তিনজন জেমএবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের পরিচয় জানা যাবে।”
তিনি জানান, আটকদের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সাতজনের মধ্যে ছয়জনকে পাওয়া গেছে ওই ভবনের ছয় তলায়। আর বাকি একজনকে রাতেই বিস্ফোরকসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “হোসাইনী দালান, কামরাঙ্গীর চরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এর আগে যে ধরনের হাতে তৈরি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছিল, এই ভবনের বিস্ফোরকগুলোও সেরকম।” পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেন, “ছয়তলার পাশাপাশি দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হয়। একটি ফ্ল্যাট থেকে বিস্ফোরকসহ দুইজনকে আটক করা হয়। সেখানেই রান্না ঘরে, লোহার ট্রাঙ্ক এবং কাপড়ে প্যাঁচানো অবস্থায়ও বিস্ফোরকগুলো পাওয়া যায়।”
আর পাশের ফ্ল্যাট থেকে আটক বাকি চারজনের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান। বাড়ির মালিকের বরাত দিয়ে ছানোয়ার বলেন, আটকরা চারমাস আগে ছয়তলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। ভাড়া নেওয়ার সময় তারা নিজেদের স্থানীয় একটি কলেজের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। “এরা ওই বাসায় গ্রেনেড বানানোর কাজ করত বলে প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি,” বলেন তিনি।