বিডিমেট্রোনিউজ ॥ নাটোরের সিংড়া থেকে শুক্রবার গ্রেফতারকৃত জঙ্গি রাশেদ ওরফে আবু জাররা ও র্যাশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নূরুন্নাহার ইয়াসমিন এ আদেশ দেন। রাশেদকে আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।
এর আগে শনিবার দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রাশেদকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
পুলিশের দাবি অনুযায়ী হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী রাশেদ ওরফে র্যাশ ওরফে আবু জাররা (২৪) সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগি। ওই হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এবং হামলায় অস্ত্র সরবারহ থেকে শুরু করে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণও দিয়েছিল রাশেদ।
মনিরুল ইসলাম বলেন, রাশেদকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিকভাবে সে হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টার কথা স্বীকার করেছে। হলি আর্টিজানের হামলার আগে ঘটনাস্থল রেকি করা হামলার জন্য বসুন্ধরা এলাকার বাসা ভাড়া সবকিছুই রাশেদ করেছে। এই সন্ত্রাসী হামলার পরবর্তী সময়ে তিনি নব্য জেএমবি বিস্তারে গুরুত্বপূ্র্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, গত বছর ঈদে রাজশাহী থেকে ঢাকায় আসে রাশেদ। আর নব্য জেএমবিতে জঙ্গি খালেদের মাধ্যমে যোগদান করে। এবং বিভিন্ন জঙ্গি হামলার ভিডিও দেখে জেএমবির সঙ্গে জড়িত হয় এবং তামিম চৌধুরী খুব কাছাকাছি আসে। হামলার সময় চারটি নাইন এমএম পিস্তল, গোলাবারুদ ও ম্যাগজিন সরবরাহ করে রাশেদ।
হলি আর্টিজান হামলার মূল পরিকল্পনাকারীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নব্য জেএমবির ২১ জন জড়িত থাকার তথ্য-উপাত্ত পান তদন্তকারীরা। তাদের মধ্যে গত এক বছরে ১৫ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে নিহত হন। চারজন কারাগারে রয়েছেন। হাদিসুর রহমান সাগর নামের একজনকে এখনও ধরা সম্ভব হয়নি।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। জঙ্গিরা ওই রাতে ২০ জনকে হত্যা করে, যাদের নয়জন ইটালির নাগরিক, সাতজন জাপানি, তিনজন বাংলাদেশি এবং একজন ভারতীয়।
এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের হামলায় দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় আহত হন পুলিশের অনেকে। পরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৫ জঙ্গিসহ ৬ জন নিহত হয়।
মনিরুল বলেন, তাকে (রাশেদ) গ্রেফতারের পর তদন্ত কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। সে যদি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় অথবা নাও দেয় তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী চার্জশিট প্রস্তুত করা হবে।