আয়্যামে জাহিলিয়াত

সৈয়দ রফিকুল আলম এর কবিতা

 

লালিমাসিক্ত ক্ষীণ আলোক বিভা চোখের তারায় চটক দিলেও বাস্তবতা আমাদের দিনানুদিনের চলমানতা ক্ষয়ে ক্ষয়ে কালো মেঘের ঢাকনায় নিশান্তের আঁধার নেমে আসে, উজ্জ্বল আশাগুলো লীন হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে। মরুর আধির নেমে ঘূর্ণচক্রে- দিকশুন্য হয়ে ইকো ছত্রাকে অঝোর ক্লান্তিহীন বৃষ্টি, বজ্রপাত, দরিয়া ঢুকে পড়ে শহর ও বন্দরে, পাহাড় ধস,  নদী ভাঙ্গা মানুষের অবিশ্রাম হাহাকার…।” যাও বা এক আধটু স্থিতিস্থাপকতার কল্যাণীয়া নেমে এলো, শুরু হলো খেয়ানত-এথলিক ক্লিঞ্জিং এর মতো দুর্বাশা নারকীয় বিভৎস বর্বর পশুর অধম ইব্লিশ শাসিত এক গোষ্ঠী হতে। দেবতুল্য শিশুদের, নিরীহ মায়েদের ভিটে পোড়ানোর অগ্নিকুণ্ডের জ্বলাৎকার; সোমত্ত নারীদের আব্রু বিনষ্টকারী পাশব, পাড়ি দেওয়া মা বোনের বিদীর্ণ অশ্রুপাত, ভুমিজ পুত্রের শোণিত স্রোতে রক্তলাল সাগর, নদী,তটরেখা, তবু বুকে এতটুকু আশা যেন – মানবেতর হলেও যেন প্রাণটা হাতে পায়,আসলে কি পায়? রোহিঙ্গা বা রোহাং, স্থিতিস্থাপকতা কমবেশ ছয়শত বছরের-এরো পড়ে সশস্ত্র ভ্রাতৃবিগ্রহ এড়িয়ে শাহজাহান পুত্র শাহ সুজা সেনা সামন্ত নিয়ে আরাকান রাজার কাছে আশ্রয় প্রার্থণা করে, ঘটনা পরম্পরায় এর সাথে আশেপাশের স্বজাতি মিশ্রিত যুতবদ্ধ হয়, শত শত বর্ষ পূর্বে তারা নিজ বাসভূমে আলো বাতাস ও মাটিতে গড়ে উঠে। আরাকান রাজ মহতি দয়াপরবশ, সুবিবেচক এবং শিল্পসাধক ছিলেন, মহাকবি সৈয়দ আলাওল ও দৌলত কাজী রাজকবি ছিলেন। তাদের পুঁথি পাঠে বিস্তৃত বর্ণাঢ্য বিষয়ের অবতারণের ছোঁয়া পাওয়া যায়, তবে তখনো কিংবা এখনো মগেরমুল্লুক খ্যাত বোধবুদ্ধি রহিত কোপ উন্মাদগ্রস্ততা তাদের আদি সংস্কার ছিল। এই জনগোষ্ঠীর পোড়া ভিটে বসতি নির্মূল উচ্ছেদ প্রথা আরশ কাঁপা খোদাই গজব তাদের উপর একদিন নেমে আসবে। আমাদের দেশ ক্ষুদ্র, বহুল-জনবসতি, আমাদের ঔদার্য্য বংশ পরম্পরায় বিপদগ্রস্তদের পাশে থাকা এবং সামর্থ্যের যতোটুকু আছে কিংবা সম্ভব ভাগ করে নেয়া এটাই আমাদের মানবতা। কারণ আমরা মানুষ।

14

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts