বিডিমেট্রোনিউজ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলি ইউনিয়নে রহস্যময় সুরঙ্গের সন্ধান মিলেছে। মঙ্গলবার বিকেলে এই সুরঙ্গের সন্ধান পাওয়ার পর থেকে মিরসরাই উপজেলায় এই নিয়ে চলছে তোলপাড়। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটিকে কোনো প্রাণির দ্বারা তৈরি গর্ত বলে দাবি করা হয়েছে।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির জানান, উপজেলার ২ নম্বর হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরেরঘোনা ডুল্লাছড়ি এলাকায় একটি সুড়ঙ্গের সন্ধান মিলেছে। জনবসতি শূন্য এলাকায় কে বা কারা এই সুড়ঙ্গটি খুঁড়েছে জানা যায়নি। তবে এটি আসলেই সুরঙ্গ কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সুড়ঙ্গ হলে একপাশ দিয়ে প্রবেশ করে অন্যপাশ দিয়ে বের হওয়া যেত। এটি অনেকটা গর্তের মতো। এই গর্তে এমন কিছু নেই। গর্তের ভেতরে বিপজ্জনক কিছু পাওয়া যায়নি।
ওসি জানান, ‘যেহেতু গর্তটি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমরা বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছি। এটি শিয়াল বা ভাল্লুকের গর্ত হতে পারে।
স্থানীয়রা জানান, সুড়ঙ্গটির প্রায় ২ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো জনবসতি নেই। রয়েছে পাহাড় আর ফসলী জমি। এই সুরঙ্গটি কোন জঙ্গি সংগঠন তৈরি করে থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে ‘যুবকমান্ড’ নামের একটি গ্রুপ উপজেলার মীরসরাই সদর ইউনিয়নের মধ্যম তালবাড়িয়ার পাহাড়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিত। মীরসরাই থানার তৎকালীন ওসি মাহফুজুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ‘যুবকমান্ডের’ সেই আস্তানা গুঁড়িয়ে দেয়।
২০০১ সালে নিজামপুরের পাহাড়ি অঞ্চলে আস্তানা তৈরি করে ‘আল-খিদমত’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা। ২০০৭ সালে তত্ববধায়ক সরকারের সময় ভারতের সীমান্তবর্তী মীরসরাইয়ের কয়লা এলাকায় ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) অস্ত্রভাণ্ডার ও ক্যাম্পের সন্ধান মেলে।
২০১১ সালের অক্টোবরে উপজেলার মীরসরাই সদর ইউনিয়নের তালবাড়িয়া এলাকার মন্দিরা পাহাড়ে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বাংকার এবং পরে পাশের বদরখাঁ পাহাড়ে আরো দুটি বাংকারের সন্ধান পাওয়া যায়। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক মহামায়ার গহীন পাহাড়ে সন্ধান মেলে আরো একটি বাংকারের।
নতুন করে সন্ধান পাওয়া এই সুরঙ্গের ভেতর প্রবেশ করে ফিরে আসা স্থানীয় যুবক ইলিয়াছ শরিফ জানান, লোকমুখে শুনে তিনি সুরঙ্গটি দেখতে এসেছেন। পরে তিনি সুড়ঙ্গটির প্রায় ৩০ ফুটের মতো ভিতরে ঢুকেছেন। তবে কত ফুট দৈর্ঘ্য তা শেষ পর্যন্ত না গিয়ে বলা যাচ্ছে না। সুরঙ্গের ১০ ফুট পরপর প্রায় ৬-৭ জন লোক বসার মতো জায়গা রয়েছে। সুড়ঙ্গের ভেতরের পথ সঙ্কুচিত হওয়ায় ভেতরে যাওয়া যায়নি।