এমন বিষন্ন মুখই বলে দেয় সিরিজ হেরেছে টাইগাররা।
এভিন লুইসের টর্নেডো ইনিংসে উড়ন্ত সূচনা পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুইশ রানের নিচে থামিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন বোলাররা। লিটন দাসের ব্যাটে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দারুণ। কিন্তু কিমো পলের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে পথ হারানো বাংলাদেশ পেরে ওঠেনি শেষ পর্যন্ত। হেরে গেছে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে।
প্রথমবারের মতো সিরিজের তিনটি সংস্করণেই জেতা হল না বাংলাদেশের। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে জেতা দলটি টি-টোয়েন্টিতে হেরে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে।
মুস্তাফিজুর রহমানকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ১৭ ওভারে ১৪০ রানে থামান কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। ১৯১ রানের লক্ষ্য দেওয়া সফরকারীরা জিতেছে ৫০ রানে। ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে এই সংস্করণের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
১৭ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ২২ রানে অপরাজিত থাকেন আবু হায়দার।
উইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হার দিয়ে বছর শেষ করলো টাইগাররা। মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সফরকারীদের দেওয়া ১৯১ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ১৪০ রানে গুটিয়ে গেছে সাকিব বাহিনী। ব্যাটসম্যানদের বিব্রতকর ব্যাটিংয়ে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৫০ রানে হারে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
উইন্ডিজের বিপক্ষে ২-১ এ টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারলেও টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে জয় পেয়েছে টাইগাররা। টেস্টে ধবল ধোলাই করলেও ওয়ানডেতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজের ট্রফি জেতে লাল সবুজের দল।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে দু-দলই একটি করে ম্যাচ জেতায় শেষ ম্যাচটি দাঁড়ায় অলিখিত ফাইনালে। তবে আজ বৃহস্পতিবার শেষ ম্যাচে এসে দিনটি নিজেদের করে নিতে পারলেন না টাইগাররা। টসে হেরে আগে ব্যাট করে ১৯০ রান করে উইন্ডিজ। ১৯১ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দরুন শুরু করে বাংলাদেশ। তবে ম্যাচের দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে যায় একটি নো-বল কাণ্ডের পর।
তিন ওভার ছয় বলের সময় ওশান থমাসের করা একটি বলে লিটন দাস ক্যাচ তোলেন। উইন্ডিজ ফিল্ডার ক্যাচ ধরলেও আম্পায়ার তানভীর আহমেদ নো-বলের সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় থমাস লাইন ক্রসই করেননি। উইন্ডিজ ফিল্ডাররা বারবার আবেদন করলেও নো-বলের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন আম্পায়ার। এ জন্য কিছুক্ষণ খেলা থেমেও থাকে। অনেক জল গড়ানোর পর খেলা শুরু হলেও টাইগাররা ফিরতে পারেননি স্বরূপে।
৬৫ থেকে ৯৬ রানের মধ্যে বাংলাদেশ হারায় ৭ উইকেট। সর্বোচ্চ ৪৩ রান আসে লিটন দাসের ব্যাট থেকে। মাহমুদুল্লাহ ও মেহেদি মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান করে। সাকিব-আরিফুল হক ফেরেন কোনো রান না করেই। তামিম ৮ ও সৌম্য ৯ রান করে সাজঘরে ফিরেন। শেষ দিকে ২২ রান করে হারের ব্যবধান কমান আবু হায়দার রনি।
উইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট নেন কেমো পল। ফ্যাবিয়ান অ্যালেন দুই উইকেট ও শেলডন কটরেল, কার্লোস ব্রাফেট নেন একটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৯.২ ওভারে ১৯০ (লুইস ৮৯, হোপ ২৩, পল ২, পাওয়েল ১৯, হেটমায়ার ০, পুরান ২৯, ব্র্যাথওয়েট ৮, রাদারফোর্ড ২, অ্যালান ৮, কটরেল ২*, টমাস ০; আবু হায়দার ০/৩৯, সাইফ ০/৩৬, মিরাজ ০/২৬, সাকিব ৩/৩৭, মুস্তাফিজ ৩/৩৩, মাহমুদউল্লাহ ৩/১৮)
বাংলাদেশ: ১৭ ওভারে ১৪০ (তামিম ৮, লিটন ৪৩, সৌম্য ৯, সাকিব ০, মুশফিক ১, মাহমুদউল্লাহ ১১, মিরাজ ১৯, আরিফুল ০, সাইফ ৫, আবু হায়দার ২২*, মুস্তাফিজ ৮; কটরেল ১/৩২, টমাস ০/৫৬, অ্যালেন ২/১৯, পল ৫/১৫, ব্র্যাথওয়েট ১/১৫)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫০ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ