মেঘনায় লঞ্চ দুর্ঘটনা : প্রাণে রক্ষা পেল ৩শ’ যাত্রী

জাকির হোসেন বাদশা, মতলব, চাঁদপুর : ঢাকা থেকে ভোলার লালমোহনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এমভি গ্লোরী অব শ্রীনগর-২ লঞ্চকে একটি বালুভর্তি বাল্কহেড সজোরে ধাক্কায় দিলে লঞ্চের তলাফেটে পানি উঠে ডোবার উপক্রম হয়।

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর দশানী-মোহনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এমভি গ্লোরী অব শ্রীনগর-২ লঞ্চটি ঢাকা থেকে ভোলার লালমোহন যাচ্ছিল। অল্পের জন্য লঞ্চে থাকা তিন শতাধিক যাত্রী প্রাণহানি থেকে রক্ষা পায়।

জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লালমোহনগামী এমভি গ্লোরী অব শ্রীনগর-২ লঞ্চটির সাথে বালু ভর্তি বাল্কহেডের ধাক্কা লাগে। ধাক্কায় লঞ্চটির তলা ফেটে যায় এবং পানি উঠে অর্ধনিমজ্জিত হয়ে যায়। লঞ্চটি দ্রুত নদীর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বিভিন্ন নৌযানের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপদে নদীর পাড়ে নামানো হয়। স্থানীয় জনসাধারণ সহযোগিতা করেন। পরে ঢাকা থেকে এমভি গ্লোরী অব শ্রীনগর-৮ ও এমভি গ্লোরী অব শ্রীনগর-৩ লঞ্চ এসে যাত্রীদের গন্তব্য উদ্দেশ্যে নিয়ে গেছে।

লঞ্চযাত্রী ডাক্তার মুকুুলের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার ঘটনাস্থলে পৌছে মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন ও সদস্য, মোহনপুর কোস্ট গার্ডের সদস্য, কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোবহান সরকার সুভা, গ্রাম পুলিশ সদস্য, ফায়ার সার্ভিস এর সদস্য এবং মোহনপুর ও কলাকান্দা ইউনিয়নের জনগনের সহায়তায় লঞ্চ যাত্রীদের উদ্ধার কাজ করেন।

mot-2
লঞ্চযাত্রী ডাক্তার মুকুুলের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তারাবী নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে খবর পেয়ে আমার ছুটে আসি। যাত্রীদের উদ্ধারে গ্রামবাসী ঝাপিয়ে পড়ে।

লঞ্চের মাষ্টার নুরুল আলম জানান, ৬.৩৫মিনিটে ঢাকা থেকে লঞ্চটি ছেড়ে আসি, মোহনপুর-দশানী নামক স্থানে আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা বালু ভর্তি বাল্কহেড আমার লঞ্চটিকে সজোরে ধাক্কায় দেয়। লঞ্চে পানি উঠতে দেখে লঞ্চ তীরে নোঙ্গর করি। স্থানীয়দের সহায়তার যাত্রী ও মালামাল ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাই।

মোহনপুর নৌ-পুলিশের এএসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাতে লঞ্চ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ছুটে আসি। উপজেলা প্রশাসন, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড ও স্থানীয়দের সহায়তায় যাত্রী ও মালামাল ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করি।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার উদ্ধার কাজ সংশ্লিষ্ট সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যগণ সংবাদ পাবার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা সত্যিই প্রশংসনীয়। আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমত এবং সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় একটি মর্মান্তিক দূর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার কাজ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

Print Friendly

Related Posts