বিডি মেট্রোনিউজ ॥ সোমবার সকাল-সন্ধ্যা সারা দেশে হরতাল ডেকেছে জামায়াত। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের নামে রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিয়ে দেশকে ধর্মহীন রাষ্ট্রে পরিণত করার গভীর চক্রান্তের প্রতিবাদে’ জামায়াতের এই হরতাল।
এবার অন্য ইস্যুতে হরতাল ডেকেছে জামায়াত। দেখা যায়, তাদের ডাকা হরতালের বেশিরভাগই যুদ্ধাপরাধী কোন জামায়াত নেতার সাজা সংশ্লিষ্ট।
সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়ে কার্যত বিরোধী দলবিহীন চতুর্থ জাতীয় সংসদে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী অনুমোদন পায়। এর দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে যুক্ত ২ (ক) দফায় বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে’।
ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ১৯৭১ সালে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে এই পরিবর্তনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তখনই হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করেন ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক।
২৮ বছর আগের ওই আবেদনের ভিত্তিতে দেওয়া রুলের ওপর সোমবার হাই কোর্টের বৃহ্ত্তর বেঞ্চে শুনানি শুরু হচ্ছে, যার বিরোধিতায় জামায়াতের এই হরতাল।
তিন বছর আগে ঢাকার মতিঝিলে নারী প্রগতিবিরোধী সমাবেশ থেকে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামও আদালতের রায় রাষ্ট্রধর্মের বিপক্ষে গেলে দেশ অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে।
নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “হাতে গোণা কতিপয় রাষ্ট্র ও ধর্ম বিদ্বেষী ব্যক্তিকে খুশি করার জন্য সরকার যদি সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তা কখনো মেনে নেবে না।”
রাষ্ট্রধর্ম থাকলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার পূরণ হয় না- এমন যুক্তি ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে তা দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।