বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী

সৈয়দ ফারুক হোসেন

ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির মাস। বিশ্বের মানচিত্রে ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি রাষ্ট্রের জায়গা করে নেওয়ার মাস। বাঙালি জাতির গর্ব আর অহংকারের মাস। এটি শুধুই একটি মাস বা একটি দিন নয় বরং একটি রক্তাক্ত ইতিহাস! ডিসেম্বর মাস বাঙালি জাতিসত্তার অনন্য এক চেতনার মাস। লাখো শহীদের স্মৃতিবিজড়িত মাস। বীরাঙ্গনাদের করুণ ইতিহাসের মাস। লাল-সবুজের পতাকার মাস। প্রাণপণ লড়াইয়ের মাস। স্বাধীনতাকামী সাড়ে সাত কোটি বাঙালির ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় সংকল্পে ৩০ লাখ শহীদ আর অজস্র মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ২৪ বছরের পাকিস্তানি শাসন-শোষণকে পদানত করে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা এবং আমরা খুঁজে পেলাম গৌরব আর অহংকারের ‘বিজয়’।

বিজয়ের পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশ এখন অর্ধশত বছরে। এবার বাংলাদেশ বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে যখন মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। বিশ্ববাসী আশা করেছিল করোনার প্রভাব কমে আসছে এবং পৃথিবী আবার নতুন উদ্যোমে ঘুরে দাঁড়াবে কিন্তু এরই মধ্যে আবার করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ নাম নিয়ে চোখ রাঙাচ্ছে বিশ্ববাসীকে! আশা করছি বাংলাদেশ সরকার এই ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং ‘ওমিক্রন’ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বিজয়ের গৌরবগাঁথা ত্যাগের ইতিহাস। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম একই আবেগ আর শিা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। শীত এলেই যেমন শীত পিঠা, খেজুর রস, বর্ষায় কদম আর শরতে কাশফুল নিয়ে ভাবি তেমনি ডিসেম্বর এলেই আমরা বিজয়ের কথা ভাবি। দেশ এগিয়েছে অনেক।

আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রচেষ্টা চলছে, উন্নয়নের গতিধারাও চলমান । সর্বজনীন আধুনিক শিা ব্যবস্থার ভিত গড়তে হবে। মৌলিক অধিকারের অন্যতম ‘স্বাস্থ্যসেবা’ নিশ্চিত করতে হবে। সর্বসাধারণের জন্য যুৎসই স্বাস্থ্যনীতি এবং চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বিজয় দিবসকে শুধু একটি উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বছরব্যাপী কীভাবে বিজয়ের আমেজ আমাদের জীবনে থাকে সেদিকে আমাদের দৃষ্টিপাত করা এবং সে লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া জরুরি। বিজয়ের রেশ যেন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে থাকে। সারাবছর যেন আমরা স্মরণ করি দেশ মাতৃকার জন্য যারা যুদ্ধ করেছেন সেসব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকে যেন সমুন্নত রাখতে পারি সে প্রচেষ্টা থাকতে হবে সবার মনে। সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেকে যেন দেশ-জাতির কল্যাণের কথা ভেবে দেশের উন্নয়নে মেধা-মনন ঢেলে দিই। ভেদাভেদ, প্রতিহিংসা আর মতা দখলের অগণতান্ত্রিক মনোবৈকল্য বাদ দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমিকে একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী ও আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারলেই বিজয়ের এই সুবর্ণজয়ন্তী ও আনন্দ-উল্লাস সত্যিকার অর্থে পরমানন্দ হয়ে উঠবে।

আমরা ১৯৭১-এ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ইতিহাসের অনন্য উদ্দীপক ভাষণ শুনেছি, মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বীরবিক্রম দেখেছিল বাঁশি, বাংলাদেশকে বর্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কবজা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে লড়াই করতে করতে অকাতরে প্রাণ দিতে দেখেছি—সেই আমাদের কী সৌভাগ্য! আমরা বাংলা ও বাঙালির তিন ঐতিহাসিক ঘটনা ও অনন্য সাফল্যের বর্ণিল উৎসবের অংশীদার হতে পারলাম। প্রথমেই বাংলার ইতিহাসের মহানায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে তাঁর জন্মশতবর্ষে আমাদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই। এই ছোট লেখায় তাঁর বহুমুখী প্রতিভা ও রাষ্ট্র নায়কোচিত প্রজ্ঞার ওপর আলোকপাত করা সম্ভব নয়। তাই তাঁর মূল সাফল্যের কটি দিকে আলোকপাত করব।পূর্ব বাংলার বাঙালি কত শত শত বছর ধরে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছে, অসংখ্য আঞ্চলিক কৃষক বিদ্রোহ করেছে। পূর্ব বাংলায় এমনি উপনিবেশবিরোধী শত সংগ্রামের অগ্নিগর্ভ কিন্তু বিমুখ প্রান্তর।বিজয় অর্জনের পেছনে ত্যাগের যে প্রেক্ষাপট রয়েছে তা আজ সবার মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার দিকে তাকালে আমরা যে অগ্রগতির ছোঁয়া দেখতে পারি তার মূল সূচনা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ১৯৭২ সালে দেশে প্রত্যাবর্তনের পরে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপর মাধ্যমে। বর্তমানে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ও চাকরিজীবী মানুষের সংখ্যাও অনেক। শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা নিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বাইরের দেশে নিজের প্রতিভার পরিচয় দিচ্ছে। নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে পুরো বিশ্বকে। নতুন নতুন পরিকল্পনার সঙ্গে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসম্মত শিক্ষা ও মানোন্নয়নের দিকে দৃষ্টিপাত করা হচ্ছে। স্বাধীনতার পর যে দেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছিল সেই দেশের অগ্রগতি আজ সবার কাছে প্রশংসার পাত্র। দেশটি এখন অনেকের কাছে রোল মডেল।সবুজের মাঝে রক্তিম আভার যে পতাকা সেই পতাকার সম্মান ৫০ বছরে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রে নয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি সব ক্ষেত্রে এগিয়েছে বাংলাদেশ। এই সমৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে ৫০ বছরে পদার্পণে বাংলাদেশ হয়েছে একটি সমৃদ্ধিশালী দেশ।

যে বাঙালি ১৯৭১ সালের যুদ্ধে দমে যায়নি সেই বাঙালি কখনই পিছিয়ে থাকবে না। রপ্তানি খাত কোনো দেশের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ খাত। বাংলাদেশের জন্য তার ব্যতিক্রম নয়। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৩৮৩ মিলিয়ন ডলার, বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি ৮০ গুণ বেড়েছে। সেই সঙ্গে এখন রপ্তানি পণ্য, উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো তৈরি পোশাক খাত। এ খাতে বাংলাদেশের সাফল্য তাৎপর্যপূর্ণ। অনেক শ্রমজীবী মানুষ এ খাতের সঙ্গে যুক্ত আছে যারা নিজেদের কর্মসংস্থান পেয়েছে। এটা দেশের বেকারত্ব হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে প্রত্যাশা একটাই একদিন আমাদের আমদানি ব্যয়ের থেকে রপ্তানি আয় বেশি হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের যে চিত্র তা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে নির্দেশ করে। নারীর মতায়ন প্রতিটি স্তরে প্রতীয়মান হচ্ছে। দেশের অগ্রগতি সব বিষয় নারীরা তাদের প্রতিভার পরিচয় দিচ্ছে।

১৯৭১-এর ২৫ মার্চ হানাদার পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী শুরু করে ভয়াবহ গণহত্যা। ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বাঙালিকে মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়ে হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি হন। বীর বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করে দেশ স্বাধীন করে।বাস্তবায়ন করা হচ্ছে পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলো।মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা এ তিনটি সূচকে শর্ত অনুযায়ী উন্নতি করায় জাতিসংঘের সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাবে বাংলাদেশ।

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘের অনুমোদন পাওয়ার মধ্য দিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বিশ্বে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করবে।দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। কারণ এ উন্নতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির প্রমাণ দেয়। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা-এ তিন মানদন্ডে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়। এই তিন শর্তই পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের জন্য সাফল্যেরও খবর। বাংলাদেশের মানুষের জন্য আনন্দের খবর। আমাদের জন্য তথা বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত গৌরবের একটি বিষয়।

২০২১ সালে ৫০ বছরে পা রাখতে চলেছে বাংলাদেশ নতুন নতুন অর্জনের সঙ্গে প্রাপ্তি-উল্লাসে আর প্রত্যাশাগুলোকে সামনে রেখে। তবে বর্তমান পুরো বিশ্বের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। করোনা জর্জরিত পুরো বিশ্বের এখন একটাই প্রত্যাশা, সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া। নতুন এক পরিবেশের সঙ্গেই বাঙালি সুবর্ণজয়ন্তীর আমেজ অনুভব করছে। সব প্রকার বাধা পেরিয়ে উন্নয়ন ও সাফল্য অর্জিত হোক। ২০২১ সালের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের মূল ল্য ও প্রত্যাশাগুলো সফল হোক। জন্মের ৫০ বছরের মধ্যেই দুর্বার গতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত দুই দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা সামাজিক উন্নয়ন- যে কোনো সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি অভূতপূর্ব। সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্যতা হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি সব ক্ষেত্রেই বিশ্বে বাংলাদেশ এক বিস্ময়ের নাম।

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর নিঃসন্দেহে আনন্দ ও বেদনার। কারণ দীর্ঘ নয় মাস রক্তয়ী যুদ্ধের পরে এ মাসে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন; পাকিস্তানি হানাদারদের লজ্জায় ফেলে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছেন। যে রেসকোর্স ময়দানের কালীমন্দিরে পাকিস্তানি হানাদাররা অগণিত নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, সে মন্দিরের পাশেই একাত্তরে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রধান জেনারেল নিয়াজিকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা হয়েছে। তখনকার সময়ে বিশ্বের অন্যতম চৌকস সেনাবাহিনী হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ৯৫ হাজার সেনা অসম্মানজনকভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্র সমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছে; মাথা নিচু করে ব্যারাকে ফিরে গিয়েছে; ধুলায় ভূলুণ্ঠিত হয়েছে দম্ভ। আর দেশের শ্রেষ্ঠ সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধারা রাইফেল উঁচিয়ে দম্ভভরে ঢুকেছে তাদের অহংকার নিজেদেরই তৈরি নতুন রাষ্ট্রের রাজধানীতে। বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে একটি নতুন পতাকা, একটি পরিবর্তিত বিশ্বমানচিত্র।

আনন্দের এ মাসের প্রথম থেকেই বিজয় পতাকা উড়তে থাকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের রণাঙ্গণে।এক যুগ আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। আজকের বাংলাদেশ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে। এর ফলে ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি মিলবে। বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরাধিকারী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পিতার মতো মমতা নিয়ে বাঙালি ও বাংলাদেশকে ভালোবেসেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নেওয়ার ব্রত গ্রহণ করেছেন।বঙ্গবন্ধুকন্যা মেধাবী, পরিশ্রমী, সৎ, প্রভাবশালী ও সফল রাষ্ট্রনায়কদের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে উন্নয়নের নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা সক্ষম হবে।

১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তয়ী মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই দিনে বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে বিজয়ের লাল সূর্য। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে দীর্ঘদিনের শোষণ আর বঞ্চনার।যাদের জীবন উৎসর্গে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। মুক্তির স্বাদ নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার এ দিনে লাল সবুজের উৎসবে উদ্বেলিত হবে জাতি। উচ্চারিত হবে সমৃদ্ধ দেশ গড়ার শপথ। এবারের বিজয় দিবস এসেছে ভিন্ন এক প্রক্ষাপটে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর এ বছরেই ২০২১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করে বাংলাদেশ। ন’মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে আসে স্বপ্নের প্রভাত। ১৬ই ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সূচিত হয় মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার-কুমার সবাই শরিক হয় মুক্তির এ লড়াইয়ে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল দীর্ঘ নয় মাসের রক্তয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী একসঙ্গে পালন করা হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য বিশাল সৌভাগ্য ও ঐতিহাসিক বিষয়।

লেখক: ডেপুটি রেজিস্ট্রার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

 

Print Friendly

Related Posts