বঙ্গবাজার এখন ছাইয়ের স্তূপ, ব্যবসায়ীরা কাঁদছেন

দিনের আলো ফুটতেই স্পষ্ট প্রায় ২২ হাজার বর্গফুট এলাকার পোড়া ক্ষত। একদিকে সর্বস্ব হারানো ব্যবসায়ীদের আর্তনাদ আর অন্যদিকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী ঘিরে ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতা।

বুধবারও (৫ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। ঈদ তো বটেই, পরিবার-পরিজনসহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বঙ্গবাজারের অন্তত ১৫ হাজার পরিবারের ভবিষ্যৎ। কী করবেন, কোথায় যাবেন, কীভাবে চলবে সংসার–এসব প্রশ্ন এখন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে ঘুরপাক খাচ্ছে।

বঙ্গবাজারের ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মালামাল সরাচ্ছেন। অনেকেই কিছু পণ্যসামগ্রী অক্ষত থাকতে পারে- এ আশায় পোড়া ছাই আর ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন। এছাড়াও জীবনের শেষ সম্বল হারানো হাজারও ব্যবসায়ীরা ঘুরে ঘুরে তা দেখছেন আর স্মৃতিচারণ করছেন।

মল্লিকা গার্মেন্টস নামে নূর আলমের বঙ্গবাজারে দোকান ছিল। তিনি মূলত থ্রিপিস, শাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের জামা বিক্রি করতেন।গতকালের আগুনে তার দুটি দোকানের ৮০ লাখ টাকার সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়েছে। সব হারিয়ে পুড়ে যাওয়া দোকানে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন নূর আলম। বন্ধু-বান্ধব,আশপাশের দোকানদার কেউ তার কান্না থামাতে পারছে না।

নূর আলম বলেন, এই মার্কেটে আমার দুটি দোকান ছিল। এখন একটি দোকানও নেই। নগদ টাকা যা ছিল বস্তায় ভরেছিলাম। সব কিছু পুড়ে ছাই, এখন কিছু নেই।ঈদ ঘিরে স্ত্রীর গহনা, জমি বন্ধক এবং ব্যাংক ঋণ নিয়ে ৬০ লাখ টাকার মালামাল কিনেছিলেন তিনি। সব মিলে দোকানে এক কোটি টাকার মালামাল ছিল। এখন আর কিছু নেই।

বঙ্গবাজার মার্কেটসহ আশপাশের মার্কেটে কুলির কাজ করা আক্কাস আলী পাগল প্রায়। এদিক সেদিক ছুটছেন। তিনি বললেন: সবার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোন ক্রেতা বিক্রেতার কোন ব্যস্ততা নেই। আমরাও আজ বেকার, সবার ক্ষতি। অথচ একদিন আগেও সব দোকানে কাস্টমারদের ভিড় লেগে থাকতো, আমরা তাদের মালামাল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এনে দিতাম।

বঙ্গবাজারের আরেক শ্রমিক রহিজ উদ্দিন জানালেন, ঈদের বাজারে আমাদের ব্যস্ততা বেশি থাকত। মার্কেটে মানুষে গমগম করতো। বিক্রেতারা পাইকারি মাল নিতে আসতো। কিন্তু আজ সব থেমে আছে, চারদিক থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।

Print Friendly

Related Posts