গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গুরুতর অসুস্থ হয়ে তিনি রাজধানীর ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৮১ বছর বয়সী জাফরুল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কিডনিসহ নানা রোগেও ভুগছিলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন ভাস্কুলার সার্জন। তিনি মূলত জনস্বাস্থ্য চিন্তাবিদ। ১৯৮২ সালের ওষুধনীতি দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে, ওই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বহির্বিশ্বে তাঁর পরিচয় বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।

বর্তমানে তার মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

বুধবার (১২ এপ্রিল) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারপারসন আলফাতুন নেসা মায়া জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। একইসঙ্গে সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবেও তাকে শ্রদ্ধা জানানো হবে।বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শহীদ মিনারে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর লাশ রাখা হবে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দুপুর আড়াইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডা. জাফরুল্লাহর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন শুক্রবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সকাল ১০টায় তার লাশ নেওয়া হবে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। জুমার নামাজ শেষে সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর শোক:

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা এক শোক বার্তায় বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ঔষধ শিল্প ও জনস্বাস্থ্য খাতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

বিএনপির শোক :

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বিএনপি। আজ বুধবার দুপুরে দলটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বার্তায় শোক জানানো হয়।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে শোক বার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর সেনানী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজীবন দেশ, জাতি ও জনগণের কল্যাণে অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্পষ্টবাদী। স্বাধীনতাযুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ জনগণের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল, স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসার জন্য গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন এবং সমাজসংস্কারে ও বিবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সব সংকটে তিনি এগিয়ে এসেছেন অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে তার বলিষ্ঠ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর-উত্তম তাকে প্রথম স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করেন। আওয়ামী সরকারের গণতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপ এবং ভোটাধিকার হরণের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে তিনি অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন এবং দুর্নীতি, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমি শোকাহত। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

Print Friendly

Related Posts