ইলিশা ll নতুন গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে

দেশের নতুন গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে ভোলার ইলিশা। সব ঠিক থাকলে এটি হবে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব জ্বালানি বিভাগে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।

দেশের গ্যাস সংকট আর ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে জ্বালানি খাতে নতুন সম্ভাবনা জাগাচ্ছে ভোলার ইলিশা। তিনটি স্তরে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সাফল্য পাওয়ার পর বাপেক্সের ধারণা, ইলিশা-১ কূপটিতে মজুত রয়েছে ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এ মজুত দেশের বিদ্যমান অন্তত দশটি গ্যাসক্ষেত্রের তুলনায় বেশি।

বাপেক্স বলছে, প্রাথমিক অবস্থায় ইলিশা-১ থেকে দৈনিক ২০ থেকে ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের যোগান দিতে পারবে ইলিশা। আর এখান থেকে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে ২৫ থেকে ২৭ বছর পর্যন্ত।

তবে ইলিশা নতুন কোনো গ্যাসক্ষেত্র হবে নাকি বিদ্যমান কোনো ক্ষেত্রের অংশ হবে – এ নিয়ে এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অবকাঠামোগত দিক থেকে স্বতন্ত্র অবস্থানে রয়েছে ইলিশা। কাছাকাছি দূরত্বে থাকা প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরের ভোলা নর্থ-১ গ্যাসক্ষেত্র থেকে ভূগঠনের দিক থেকেও আলাদা ইলিশা। সেক্ষেত্রে ইলিশা-১ হতে পারে নতুন কোনো গ্যাসক্ষেত্র।
 
ভূতত্ত্ববিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, ইলিশা গ্যাসক্ষেত্র তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও এটির আলাদা সত্তা রয়েছে। গঠনের সঙ্গেও অন্য গ্যাসক্ষেত্রগুলোর কোনো মিল নেই। ভোলা নর্থের সঙ্গেও ইলিশা যুক্ত নয়। তাই এটি নতুন গ্যাস ক্ষেত্র হওয়ার দাবি রাখে।
 
এদিকে জ্বালানি বিভাগের তথ্য বলছে, এরই মধ্যে খনন কার্যক্রমে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বাপেক্স। এতে কূপটিকে গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। তবে সেটি পর্যালোচনার পর আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাবেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আর চলতি মাসেই আসতে পারে এ বিষয়ে ঘোষণা। এর আগে সার্বিক দিক অবহিত করা হবে প্রধানমন্ত্রীকেও।
 
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ইলিশাকে নতুন একটি গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণার বিষয়ে টেকনিকাল কার্যক্রম শেষ হয়েছে। সরকারের অনুমোদন পেলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে।
 
উল্লেখ্য, স্বীকৃতি পেলে ভোলার ইলিশা-১ হবে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র। আর সব ঠিক থাকলে চলতি বছরেই হতে পারে ইলিশার বাণিজ্যিক উৎপাদন।
এর আগে, চলতি বছরের ৮ মার্চ ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিয়া ইউনিয়নের মালের হাট এলাকায় ‘ইলিশা-১’ কূপ খননকাজ শুরু করে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম। ৩ হাজার ৪৩৬ মিটার গভীরে গ্যাসের সন্ধান পেলে ২৪ এপ্রিল প্রথম স্তরের খননকাজ শেষ করা হয়।
প্রথম স্তরের সফলতার পর গত রোববার (৭ মে) দ্বিতীয় স্তরেও মেলে গ্যাসের সন্ধান। আর সবশেষ সোমবার (১৫ মে) প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের পর তৃতীয় স্তরেও গ্যাসের সন্ধান পায় বাপেক্স।
Print Friendly

Related Posts