নারায়ণগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রয়ণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকা অগ্রণীয়। প্রয়োজনে প্রত্যেকটি এলাকায় স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রম আরো ত্বরান্বিত করা হবে।
সোমবার (১২ জুন) বেলা ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়াস্থ মাধবীলতা সিটি প্লাজায় মানব কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের আয়োজনে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও মাদকদ্রব্যের ব্যবহার আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের তরুন সমাজের একটি বিরাট অংশ ভয়াবহ মাদকাসক্তির শিকার হচ্ছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি সমাজ ও জাতীয় জীবনে ভয়াবহ পরিনাম ডেকে আনে। কখনো খারাপ লোকের প্ররোচনা, হতাশা, নৈরাশ্য অথবা নিছক কৌতুহলবশত কেউ একবার মাদক গ্রহণ শুরু করলে সে আর এ নেশা থেকে ফিরে আসতে পারে না। মাদক মানুষের মানসিক সুস্থতাকে নষ্ট করে তাকে মানসিক ভাবে আরো দুর্বল করে তোলে এবং মাদক গ্রহণের ফলে মানুষের আচরণেরও অত্যান্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
মানব কল্যাণ পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ মান্নান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মাদক বিরোধী আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব মোঃ নিজাম উদ্দিন ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সচিব কাজী ইমরুল কায়েস।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কদম শরীফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নূর আক্তার ও গোদনাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন মিশনপাড়া পঞ্চায়েত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েম কবির, মানব কল্যাণ পরিষদের প্রচার ও দপ্তর সচিব মনোয়ার হোসেন সানি, সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবক সদস্য রহিমা খাতুন এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিগণ।
আলোচনা সভায় সামাজিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বক্তারা বলেন, একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি সহজেই অনৈতিক ও বেআইনী কাজে জড়িয়ে পড়ে। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করে এবং চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি করে অসৎ পথ অবলম্বন করে। মাদকসক্তরা পরিবার এবং সমাজে ভীতি ও আতংকের সৃষ্টি করে। মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন জটিল ও দুরারোগ্য রোগব্যাধি দেহকে আচ্ছন্ন করতে থাকে। ব্যক্তিত্বের অবসান ঘটে ও কর্মক্ষমতা লোভ পায়। মাদকসক্তির সর্বনাশা ছোবল দেশের তরুন সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজের জন্য মাদকসক্তি নির্মূল করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন ব্যক্তিগত সামাজিক সচেতনতা ও দৃঢ় প্রতিরোধ ব্যবস্থা। তবেই আমরা পেতে পারি একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ।