দীর্ঘ চার মাস ১২ দিন পর মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হয়েছে।
৭২৫ বর্গকিলোমিটারের কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করা ও অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছর ১ মে থেকে তিন মাসের জন্য কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হয়। তবে এবার হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় ১ মে এর পরিবর্তে ২০ এপ্রিল থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত তিন মাসের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু এর মধ্যেও কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না থাকায় দুই দফায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়। আজ ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে হ্রদে মৎস্য আহরণ।
রাঙামাটি বিএফডিসি অফিস সূত্র জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদে ১০৫ এমএসএল (মিনস সী লেভেল) পানি থাকলেই অবমুক্ত করা পোনা বেড়ে উঠতে ও মা মাছগুলো প্রাকৃতিক প্রজননের পর্যাপ্ত সুযোগ পায়। তবে এবার কাপ্তাই হ্রদে বর্ষার শুরুতে কম বৃষ্টিপাত ও ভারতের মিজোরাম থেকে পানি না আসায় হ্রদের পানি প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়েনি। স্বাভাবিক সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবং বর্ষার শেষ মুহূর্তে বৃষ্টিপাত হওয়ায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও অবমুক্ত করা পোনা সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারেনি। এই কারণে হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছগুলো বেড়ে উঠার যথেষ্ট পানি না পাওয়ায় জেলা প্রশাসন কাপ্তাই হ্রদে আরো দুই মেয়াদে ১ মাস ১২ দিন মাছ আহরণের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ায়।
এদিকে, বিএফডিসি অফিস সূত্র জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে রাজস্ব আয় হয়েছে ১১ কোটি ২৪ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা। এতে মাছ উৎপাদন হয়েছে ৫৫০৪ মেট্রিক টন। এবার কাপ্তাই হ্রদে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে ৫৬ টন। এর আগে গত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে কাপ্তাই হ্রদে থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ১১ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা। হ্রদে মাছ উৎপাদন হয়েছে ৬৫২৩ মেট্রিক টন।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া বলেন, এবার চার মাস ১২ দিন কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ ছিলো।এবার বৃষ্টিপাত ভালো হওয়ায় হ্রদে পানি পরিপূর্ণ রয়েছে। আশা করছি মাছ উৎপাদনও ভালো হবে। আমরা ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবো।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন। পল্টুন মেরামত, মাছের অবতরণ ঘাটগুলো পুনঃসংস্কারসহ নানান কার্যক্রম শেষ হয়েছে। মাছের অবতরণ সময় নির্ধারণসহ ব্যবসায়ীদের সাথে সভা করে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।। যেহেতু এবার দীর্ঘ সময় হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ ছিলো আশা করছি ভালো পরিমাণ মাছ আহরণ হবে। এতে সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।