বরিশালে জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও সিটি কাউন্সিলর একেএম মুরতজা আবেদীন এবং মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহম্মেদ মান্নার মধ্যে পিস্তল নিয়ে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। পিস্তলটি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ফজলুল করিম।
এদিকে এই ঘটনায় দুইটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
৮ মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ভূমি অফিস থেকে মুরতজা আবেদীন বের হওয়ার সময় ভূমি অফিসের সামনে রইজ আহম্মেদ মান্না ও তার অনুসারীদের অবস্থান করতে দেখেন। তারপর দুজনের মধ্যে কিছু কথা হয়। এরপর মান্না মুরতজার উদ্দেশ্যে নানা কথা বলতে থাকেন। মান্নার স্ত্রীকে মারধর করা হয়েছে বলে মুরতজার দিকে অভিযোগ ছোড়া হয়। একপর্যায়ে মান্না মুরতজাকে তুই সম্বোধন করে কথা বলা শুরু করলে কথা কাটাকাটি হয় এবং মান্না ও তার সহযোগিরা মুরতজা আবেদীনের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে মান্না একটি ব্যাটারিচালিত অটোর মধ্যে মুরতজা আবেদীনের কাছ থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে বেশ কিছু সময় ধস্তাধস্তি হয়। পরে মান্নার এক সহযোগী পিস্তলটি নিয়ে যায়।
ফেসবুকে ছড়ানো অপর একটি ৫৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, ব্যাটারিচালিত অটোর মধ্যে মান্না ও মুরতজার মধ্যে ধস্তাধস্তি হচ্ছে পিস্তল নিয়ে। তখন মান্না বলছিলেন মুরতজা তাকে গুলি করতে চেয়েছে। আর মুরতজা পিস্তলটি তার লাইসেন্সকৃত বলে চিৎকার করে বলছিলেন। এর মধ্যে এক যুবক এসে পিস্তলটি নিয়ে যায়।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডে সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময়ে উপস্থিত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শফিক আহমেদ বলেন, ভূমি অফিস থেকে অস্ত্র হাতে মর্তুজাসহ দুইজনে দৌড়ে এসে একটি হলুদ অটোতে মধ্যে ঢুকে পড়েন। এসময়ে কিছু লোকজন অস্ত্রসহ মর্তুজাকে ধরে পুলিশকে খবর দেয়।
জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মুরতজা আবেদীন বলেন, আমার উপর হামলা হতে পারে সেটা আমি আন্দাজ করতে পেরেছিলাম। কেননা বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকেই আমাকে ফলো করছিলো ওরা। ভূমি অফিস থেকে বের হওয়ার পর পরই আমার উপর হামলা চালায় মান্নার লোকজন। এসময় আমার কাছে থাকা লাইসেন্সকৃত পিস্তল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে মান্না।
বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহম্মেদ মান্না জানান, আমি পারিবারিক জমি সংক্রান্ত কাজে সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসে যাই। কাজ শেষে বেরিয়ে গেটে আসা মাত্র অফিস থেকে বেরিয়ে মতুর্জা আমাকে গালি গালাজ করে। এর প্রতিবাদ করলে হঠাৎ পিস্তল বের করে গুলি করতে উদ্যত হয়। এই সময়ে আমার ডাক চিৎকারে স্থানীয় জনগণ এগিয়ে এসে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, অস্ত্রটি আমাদের হেফাজতে রয়েছে, তাছাড়া কাউন্সিলর সাহেবও থানায় রয়েছেন। আমরা বিষয়টা দেখছি। আশে পাশের সিসিটিভি ফুটেজও পরীক্ষা করে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, বিসিসি নির্বাচনে মর্তুজা আবেদীনের অভিযোগের কারণে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে প্রার্থীতা হারান রইজ আহম্মেদ মান্না। কাউন্সিলর নির্বাচন নিয়ে এই দুই রাজৗনতিক নেতার সমর্থকদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এমনকি হামলার ঘটনায় রইজ আহম্মেদ মান্না গ্রেপ্তারও হন।