বরগুনার বামনায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ

ইফতেখার শাহীন, বরগুনা: বরগুনার বামনা উপজেলায় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পে কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে বলে ভূক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো অভিযোগ করেন।

বামনা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থ বছরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে অসহায় দরিদ্র ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ৬টি আবাসন (বীর নিবাস) নির্মাণ কাজের জন্য ৭৬ লাখ ৫৮ হাজার ৬’শ ২২ টাকা ৬০ পয়সা বরাদ্দ দেয়া হলে, ঠিকা চুক্তিতে এ কাজটি পায় বামনা উপজেলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তোতা মোল্লা।

নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ শেষ করার ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দরখাস্তসহ মৌখিকভাবে বলা সত্বেও এর কোন সুরাহা পায়নি ভূক্তভোগী পরিবারগুলো।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন খাঁন অভিযোগ করে বলেন, একদম নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘরের কাজ করা হয়েছে। দরজার ফ্রেমের কাঠ এতটাই নিম্নমানের যে বাঁকা হয়ে গিয়েছে, দরজা আটকানো যায়না। টিউবওয়েল, সাব মারসিবল পাম্প, সেপটিক ট্যাংক আমি নিজস্ব অর্থায়নে করেছি। শিডিউল মোতাবেক ঠিকাদারের দেয়ার কথা থাকলেও তিনি তা দেননি।

তিনি আরও বলেন, নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালু দিয়ে কাজ করার ফলে বিল্ডিং এর অনেক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বর্তমানে পরিবারসহ ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছি। কাজ তদারকির জন্য পিআইও অফিস থেকে আজ পর্যন্ত কেউ আসেনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঠিক একই আদলে নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে নির্মিত হয়েছে অন্য ঘরগুলো।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের তোতা মোল্লার ছেলে রিয়াজ মোল্লা বলেন, কাজ সঠিকভাবেই সম্পন্ন করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেনের ঘরে ফাটলের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে ফাটল মেরামত করে দেবো।

বামনা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, আমি ৪টি ঘর পরিদর্শন করেছি তাতে শিডিউল অনুযায়ী কাজ হয়েছে এবং সব কিছুই ঠিক আছে। এখন শুধু টুকিটাকি ১৫-২০ হাজার টাকার কাজ করলেই ঘরের কাজ শেষ হবে।

এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ কাজে যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে সরেজমিনে পরিদর্শন সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts