আহত কবি রাধাপদ রায়কে প্রবাসী সংগঠনের আর্থিক সহায়তা

বাদশাহ্ সৈকত: আমেরিকা প্রবাসীদের অর্থ সহয়তা পেলেন কুড়িগ্রামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত স্বভাবকবি রাধাপদ রায়।

কবির ছেলের কাছে মাত্র ৫০০ টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জেরে মারধরের শিকার হয়ে কবি রাধাপদ রায় নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গত কয়েকদিন ধরে ৮০ বছরের বৃদ্ধ আহত কবির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় তাকে নিয়ে দেশ বিদেশে আলোচনার ঝড় উঠে। কবিতা ফেরিসহ দিনমজুরি দিয়ে সংসার চালানোর এ কবির অসহায়ত্বে বিবেক তাড়িত হয়ে আমিরিকা প্রবাসী ‘লালন’ নামের একটি সংগঠন কবিকে অর্থ সহয়তা প্রদান করে।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রাতে সংগঠনের পক্ষে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কবির পরিবারের উপস্থিতিতে চিকিৎসাধীন কবির হাতে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।

অর্থ সহায়তা পেয়ে কবি রাধাপদ রায় বলেন, সুদুর আমেরিকা থেকে যারা আমাকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করলো ভগবান তাদের দীর্ঘজীবি করুক।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকালে নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের গোড্ডারপাড় এলাকায় কবি রাধাপদ রায়ের নিজ গ্রামে এ হামলার ঘটনাটি ঘটে। ওইদিন চিকিৎসার জন্য কবিকে নেওয়া হয় নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ ঘটনায় রাধাপদ রায়ের ছেলে শ্রী জুগল রায় পরদিন রোববার অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে গত বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে প্রধান আসামি রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কবির উপরে হামলার ঘটনাটি একান্তই পারিবারিক হলেও অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপপ্রচারে লিপ্ত হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক মো. সাঈদুল আরিফসহ ধর্মীয় এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কবিকে দেখতে যান। তারা কবির সাথে কথা বলে পারিবারিক দ্বন্দ্বের বিষয় বলে নিশ্চিত হন। এ বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার না চালানোর কথা বলা হয়। এমনকি কেউ অপপ্রচার চালালে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়।

উল্লেখ্য, রাধাপদ রায়ের পড়ালেখা মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। নিজের লেখা গান, কবিতা মানুষকে শুনিয়ে সামান্য উপার্জনে চলে তার সংসার। আঞ্চলিক ভাষায় তার লেখা গান ও কবিতাগুলো বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইতোমধ্যে তার লেখা কবিতা “কেয়ামতের আলামত জানি কিন্তু মানি না”। শিরোনামে কবিতাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত রাধাপদ সরকারের নিজের লেখা আঞ্চলিক ভাষায় শতাধিক গান ও কবিতা রয়েছে।

 

Print Friendly

Related Posts