শ্বেতী রোগ থেকে মুক্তি পেতে করণীয়

ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে যে রোগটি তা হলো শ্বেতী রোগ। এ রোগটিতে আক্রান্ত হলে রোগীর রূপের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। পাশাপাশি মানুষের সামনে পড়তে হয় অস্বস্তিতে। এমন পরিস্থিতিতে করণীয় :

ভিটিলিগো বা শ্বেতী রোগটি মূলত একধরনের চর্মরোগ। এ রোগটি ধবল রোগ নামেও পরিচিত। রোগটিতে আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে ছোপ ছোপ সাদা দাগ পড়ে। অটো ইমিউন ডিজিজ হওয়ায় এ সাদা দাগ শরীরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়াতে শুরু করে।

এ রোগ শুধু ত্বকই নয়, চুল এমনকি মুখের অভ্যন্তরীণ প্রাচীরকেও প্রভাবিত করতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, এই প্যাচগুলো সময়ের সাথে বড় হতে থাকে। এটি সংক্রামক বা প্রাণঘাতী না হলেও রোগটি নিয়ে আতঙ্কে থাকেন আশপাশের মানুষ।

শ্বেতী কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। শরীরে মূলত  মেলানিনের ক্রিয়াকলাপে বাধা সৃষ্টি হলে ভারসাম্যহীনতায় এ রোগ শরীরে দেখা দেয়। শরীরে মেলানিন ত্বকের স্বাভাবিক বর্ণের ভারসাম্য রক্ষা করে। কোনো কারণে এ মেলানিনের ভারসাম্য নষ্ট হলে এ রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। এ রোগে আক্রান্ত হলে সামাজিক পরিস্থিতির কারণে রোগীকে মানসিক অবসাদ ঘিরে ধরে।
 
সমীক্ষা বলছে, প্রতি ১০০ জন শ্বেতী রোগীর মধ্যে ৩০ জনই বংশগত ধারায়, মা অথবা বাবার জিনের প্রভাবে শ্বেতী রোগে আক্রান্ত হন। বাকি ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে শ্বেতী সাদা দাগ ছড়াতে থাকে নিজস্ব কারণে, যার মূলে রয়েছে মেলানিনের কারসাজি!
 
সাধারণত মুখমণ্ডল, কনুই ও বুকে প্রথমে শ্বেতী দেখা দেয়। আবার শ্বেতী চোখের পাশ দিয়ে, নাকের দুপাশে বা ঠোঁটের কোণ বা ওপর দিয়েও শুরু হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরে যদি শ্বেতীর আশঙ্কা থাকে তাহলে ১০ বছর বয়স থেকেই তা শরীরে দেখা দেবে।
 
চিকিৎসকরা শ্বেতী রোগীকে কিছু মলম পেসক্রাইব করেন, যা নির্দিষ্ট সময়ে নিয়ম মেনে লাগাতে হয়। পাঞ্চ গ্রাফটিং করেও শ্বেতী সরিয়ে ফেলা যায়। চিকিৎসকরা বলছেন, যত অল্প বয়সে শ্বেতীর চিকিৎসা করা যায় তত ভলো। ডায়াবেটিস, হাইপার থাইরয়েড যাদের রয়েছে, তাদের শ্বেতী হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
 
তাই শ্বেতী রোগ এড়াতে সবারই ডায়েট লিস্টে বেশি জোর দেয়ার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। পর্যাপ্ত পানি পানের পাশাপাশি খাবারে পেঁপে, বাদাম, আদা, তুলসী পাতা, আখরোট, অ্যালোভেরা, হলুদ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
এ ছাড়া শ্বেতী রোগ থেকে মুক্তি পেতে অ্যাভোকাডো, তরমুজ, পালং শাক, করলা, বিট, গাজর, মুলা, মাশরুম, কলা, আপেল, পেয়ারা এবং ভিটামিন এ-সি-ই-ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
 
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্বেতী হওয়ার শঙ্কা কিংবা শ্বেতী রোগে আক্রান্ত হলে রোগীকে অবশই দই, মাছ, সিফুড, আঙুর, আচার, কমলালেবু, বেড মিটস, বেগুন, বেদানা, পিয়ার, কাঁচা টমেটো, কাঁচা রসুন, কফি, চকোলেট, তেঁতুল ও মদ পান থেকে বিরত থাকতে হবে।
 
সূত্র: টিভি নাইন
Print Friendly, PDF & Email

Related Posts