সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে গোপালগঞ্জের বিউটি বিশ্বাস

অসিত রঞ্জন মজুমদার : দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই সংরক্ষিত আসনের ভোট হতে পারে। জাতীয় সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত আসন রয়েছে। ৩০০ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত করবেন। আওয়ামী লীগ থেকে নতুন মুখই বেশি আসতে পারে। দলের নেতারা বলছেন, তাদের দলের হয়ে ৩৫-৪০ জন নারী নতুন করে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হতে পারেন। মহিলা আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নারীনেত্রীরা আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয় ও নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন। প্রত্যাশীরা নিজেদের জীবনবৃত্তান্তও নেতাদের কাছে জমা দিচ্ছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা কোটায় সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন গোপালগঞ্জের কৃতি সন্তান সাবেক মন্ত্রী ভবানী শংকর বিশ্বাসের কন্যা বিউটি বিশ্বাস ।

গোপাল্গঞ্জের এই সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৬৬ সালের ৮ এপ্রিল বিউটি বিশ্বাসের জন্ম।তিনি অনেক সামাজিক ও সাংগঠনিক কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ৫৭ বছর বয়সী বিউটি বিশ্বাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৮৬ সালে হোম ইকোনোমিক্স কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন এবং তার পড়াশুনা শেষ করার পর তিনি সমাজসেবামুলক কর্মকান্ডে যোগ দেন। তিনি সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত বাংলাদেশ হিন্দু যুব কল্যাণ সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক। বাংলাদেশ যুব সংগঠন ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী সদস্য। উইমেন এ্যমপাওয়ারমেন্ট অর্গানাইজেশনের সদস্য।তিনি বাংলাদেশ যুব সংগঠন ফেডারেশনের প্রতিনিধি হিসেবে ইংল্যান্ড স্কটল্যান্ড সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া সফর করেছেন।

বাবা ভবানী শংকর বিশ্বাস ছিলেন দেশ ভাগের পর এক অন্ধ কুসংস্কারাচ্ছন্ন বাঙ্গালীর সামগ্রীক চেতনায় শ্রেণী সংগ্রামে একজন বলিষ্ট প্রতিনিধি। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের দেশ ত্যাগ এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচন পদ্ধতি এবং তফশিলীদের জন্য রির্জাভেশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের পক্ষে আজীবন সোচ্চার ছিলেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১৯৫৪ সালে প্রথমবার এবং ১৯৬২ সালে দ্বিতীয়বার এমএলএ নির্বাচিত হন এবং ১৯৬২-৬৫ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের স্বাস্থ্য, শ্রম ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ভবানী শংকর বিশ্বাস তফশীলী গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার সাহায্যর্থে সিডুল্ড কাস্ট স্টাইপেন্ড ফান্ড প্রর্বতন করেন। মন্ত্রী থাকাকালে তিনি দেশের ৬টি মেডিকেল স্কুলকে মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত করেন।

বিউটি বিশ্বাসের বড় ভাই দুলাল বিশ্বাস বাংলাদেশ জাতীয় যুব সংগঠন ফেডারেশনের এবং বাংলাদেশ হিন্দু যুব কল্যাণ সমিতির সভাপতি। তিনি দেশের জাতীয় যুব নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন।তিনি ২০০০ সালে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেলিগেশনের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘের শতাব্দী সম্মেলনে যোগদান করেন এবং যুবদের মাঝে মাদকদ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব ও তার প্রতিকার সম্পর্কে জাতিসংঘ থার্ড কমিটিতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।দুলাল বিশ্বাস গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রনালয়ের অধিনস্থ যুব কল্যাণ তহবিল পরিচালনা বোর্ডএরও সদস্য ছিলেন।তিনি যুব সম্প্রদায়ের সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নয়ন লক্ষে বিশ্বব্যাপী জনমত সৃষ্টি এবং কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়নের একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ইয়থ এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসের কান্ট্রি ডাইরেক্টর।

এদিকে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহ মিডিয়াকে বলেছেন, একজন যেন বারবার সংসদ সদস্য না হয়, সেদিকটা আমরা বিবেচনা করব।প্রার্থী মনোনয়নে যারা দীর্ঘদিন দলের জন্য কাজ করছেন, যাদের মা-বাবার দলের জন্য অবদান রয়েছে-এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দেওয়া হবে।

Print Friendly

Related Posts