আজ প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় আয়োজন শারদীয় দুর্গোৎসবের সব আয়োজন।
এর আগে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মন্দির-মণ্ডপে শেষ হয়েছে দুর্গাপূজার শাস্ত্রীয় সব পূজা অর্চনা। এবছর নবমী-দশমী তিথি একসাথে হওয়ায় একইদিনে শেষ হয় দুর্গাপূজার মূল আয়োজন।
রোববার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকেই মন্দিরে মন্দিরে চলছে বিসর্জনেরই সে প্রস্তুতি ও আনুষাঙ্গিকতা। মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, দোলায় চড়ে মর্ত্যলোকে এসেছিলেন মহামায়া দেবী দুর্গা। ঘোটকে চড়ে এবার ফিরে যাচ্ছেন কৈলাসে। দেবীকে বিদায় দিতে ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে দুর্গাপূজার দশমীর শাস্ত্রীয় সকল পূজা। শনিবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে শুরু হয় মহানবমী পূজা। এরপরই ৮টা ২৬ মিনিটে শুরু হয় দশমীর বিহিত পূজা। পঞ্জিকা ও শাস্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী, এবছর নবমী ও দশমী তিথিও পড়েছে এক সাথে। তাই একই দিনে নবমী ও দশমীর পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছেন ভক্তরা। দশমীতে দেবীর দর্পন বিসর্জনের পরই দেবীকে বিদায়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয় মন্দির-মণ্ডপে।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ রাজধানীর মূল মণ্ডপ ও মন্দিরগুলোতে আজ রোববার দেবীর ঘট বিসর্জন হবে। তার পরই হবে সিঁদুর খেলা ও প্রতিমা বিসর্জন।
মহালয়ার মধ্য দিয়ে ২ অক্টোবর এবারের দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছিল। ওইদিন থেকেই পূজার আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়। এরপর গত বুধবার ষষ্ঠী থেকে পাঁচ দিনের যে দুর্গোৎসব শুরু হয়েছিল, রোববার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই আয়োজন। দেবী দুর্গাকে বিদায় দিয়ে এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও একটি বছর।
এদিকে, বিসর্জন উৎসবমুখর ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে দেশজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। দশমীর শোভাযাত্রা ও বিসর্জন উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত ডগ স্কোয়াড, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ক্রাইমসিন টিম ও সোয়াত টিম।
রাজধানীতে বিসর্জন শোভাযাত্রার সম্ভাব্য রুট
ডিএমপি জানিয়েছে, বিসর্জন শোভাযাত্রার সম্ভাব্য রুট হচ্ছে- ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির হতে বের হয়ে পলাশী মোড়-জগন্নাথ হল-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-দোয়েল চত্বর-হাইকোর্ট বটতলা-সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল -পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স-নগর ভবন-গোলাপশাহ মাজার-বঙ্গবন্ধু স্কয়ার-গুলিস্থান-নবাবপুর লেভেল ক্রসিং -নবাবপুর রোড-মানসি হল ক্রসিং -রথখোলার মোড়-রায়সাহেব বাজার মোড় -শাঁখারীবাজার -জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়-সদরঘাট বাটা ক্রসিং-পাটুয়াটুলি মোড় ও সদরঘাট টার্মিনাল মোড় হয়ে ওয়াইজঘাট গিয়ে শেষ হবে।
বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে স্বাভাবিক নিরাপত্তার পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশও মোতায়েন থাকবে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, পলাশী মোড় ও বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় তিনটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। পলাশীর মোড়, রায় সাহেব বাজার ও ওয়াইজঘাটে স্থাপন করা হয়েছে তিনটি ওয়াচ টাওয়ার।
ডিএমপি’র পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময় ও রুট অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে।