পিতার কবিতা
————————-
“কবিতাটা অনেক আগেই পড়া
বলতে গেলে জন্মের পূর্ব থেকে”
কবিতাটা তখন অনেকে পড়েছে, শুনেছে তখন অনেকেই,
যে শুনেছিল-
হাতের মুঠোয় রৌদ্র পুরে নিয়েছিল,
বুকের ভেতর পৌরষত্বের অহংকারে
সাহসী পুরুষের বেড়েছিল আরো সাহস|
আর ভীরুরাও হয়েছিলো টগবগে আশাবাদী এবং সাহসী|
দু’চোখ জুড়ে ছিলো – স্বপ্ন আর ঘৃণা
অথবা প্রতিশোধের আগুন রক্ত লাল, আর
কবিতাটি পড়ে মা হয়েছিলেন- অন্তঃসত্ত্বা|
অতপর
নয়মাস গর্ভধারণের পর
মা জন্ম দিয়েছিলেন যে শিশুটি
তার নাম বাংলাদেশ|
আমরা আজও সেই কবিতাটি পড়ি
আমরা আমাদের কবিতা পড়ি
আমরা পিতার কবিতা পড়ি
“এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ….”
———————–
সত্য বিষয়ক
———————-
সত্যের ঘরে নির্ভেজাল সত্যে – তুমি আছ শুধু
আঁধার নয় – অবাক করা গল্পে নয়, নয়
অমার্জিত স্বপ্নে –
হৃদয় ভরা বিশ্বাস – আলোকিত সকাল আর
জোসনা সাজানো রাত – সব টুকুই তুমি |
হেঁটে বেড়ানো সবুজ ঘাস- নদীর ছান্দিক ঢেউ
বয়ে চলা ঝর্ণা – অবাক করা পাখির গান
তোমার পূজায় মগ্ন অবিরত –
কুশল জানায় তোমায় – রংধনুর সাত রং
আকাশের নীল- উদাস দুপুর-আর বাড়ি ফেরা সন্ধ্যা|
আমার পৃথিবীর সবটুকুই তোমার জন্য ,
তুমি মানে ভালবাসা – তুমি মানে সত্য,
তাই, আমার আলোকিত সত্যে – তুমি আছ
আছ আমার মগ্নতার ভেতর
আছ আমার আস্থার ভেতর
কষ্ট কাঁপানো প্রহর তাই – দুরে চলে যায়
সৌমিক শুদ্ধতায় ••••
———–
স্বস্তি
———–
নগ্ন হস্তক্ষেপ আমার-
তুমি বলবে : গোড়ালি কেন ?
আমি বলি : তোমার গোড়ালির জোরেই
হেটে আসো – আমার জীবনের আঙ্গিনায় |
তাই বিনম্র নিপুণতায় তোমার গোড়ালিদ্বয়ে নুপুর বেধে দিলাম …
নুপুরের শব্দে সবাই জানুক,-
তুমি আসছ .. তুমি আসছ .. তুমি আসছ ..
অস্থির পৃথিবী স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলুক এবার ••••
——————–
তুমি কি পুড়ো
——————-
বেলা অবেলায় ….
তুমি কি পুড়ো ?
আনমনে কিংবা কোন দুঃস্বপ্নের পর
অথবা কোন বিকেলের জন্য,
হঠাৎ উঁকি দেওয়া লাগামহীন ইচ্ছের জন্য?
আমি পুড়ি , তুমি কি পুড়ো ?
বলতে না পারা ভালোবাসার জন্য
কোন চেনা মুখ অচেনা হয়ে গেলে,
কোন নোনতা স্বাদ জীবনের জন্য ?
তুমি কি পুড়ো ,
অসমাপ্ত কবিতার জন্য, চিলকোঠার পাখির জন্য
শৈশবের চুড়ইভাতির জন্য ?
পুড়ো কি তুমি – পুকুরঘাট,দীঘির শাপলা
নদীর ঢেউ , নাম না জানা ফুলের জন্য?
তুমি কি পুড়ো ?
নাগরিক জীবনের অবসরহীন সময়ের জন্য
ভুল করে ভুল করার জন্য
প্রিয় অপ্রিয় কথার জন্য
একটু সুখ একটু হাসির জন্য?
আমি পুড়ি , হয়তো তুমিও পুড়ো
ক্ষয়ে যাওয়া জীবনে পুড়ে যাওয়াটা মনে হয় স্বাভাবিক |
——————————-
নোনা জলের কাব্য
——————————-
তুই কি বুঝিস চোখের ভাষা
মনের আশা , প্রেমের নেশায়
আগলে রাখা ?
জোসনা রাতের চাঁদের আলোয়
লুকোচুরি খেলতে জানিস ?
এক ছোঁয়াতে আপন করে
তুই কি আমায় নিতে জানিস ?
জানিস কি তুই ভালবাসার বাহু ডোরে
বেধে রাখা ?
আমার বুকের নীল কষ্ট তুই কি নিবি ?
আমার প্রাণ তৃপ্তি করে
স্বপ্ন হাজার ঘুড়ি হয়ে
আকাশেতে উড়বি কি তুই?
কষ্ট গুলো নষ্ট করে
শুদ্ধ পথের পথিক হয়ে
পাশে পাশে চলবি কি তুই ?
বোকা আমি করবি চালাক
করবি আমায় শুদ্ধি বালক,
তবেই আমি
এক পলকে চিনে নেবো
তোর চাওয়া তোর পাওয়া
বুঝলি কি তুই ?
এই আমি তোর’ই রবো – হয়ে তোর হাতের চুড়ি,
কিংবা তোর কানের দুল , নাকের নোলক |
তুই কি আমায় ফাগুন দিবি
আগুন লাগা কৃষ্ণচূড়ার
ফুল হবি ?
বলনা তুই এই আমাকে
কান্না গুলো তুই নিবি
ভ্রষ্ট গুলো ভেঙ্গেচূরে
উচ্চ কঠিন শপথ নিয়ে
এক ঝলকেই আমার হবি?
বলনা তুই …. তুই আমারি ,
না হয় আমি নীল আকাশের মেঘ
হয়ে উড়বো. …টাপুর টুপুর অকারণে
বৃষ্টি হয়ে ঝরবো … অকারণে এই পৃথিবী
বন্যা হয়ে ভাসিয়ে দেবো
উল্টে দেবো পাল্টে দেবো
ভেঙ্গেচূরে গুড়িয়ে দেবো..
বুঝবি তখন খুঁজবি তখন
আমায় কি আর পাবি তখন ?
চলে যাবো , হারিয়ে যাবো
তোর কারণে তোর’ই দুঃখে
জীবন থেকে পালিয়ে যাবো,
বলনা তুই হাত বাড়াবি?
স্বপ্ন কাজল লাগিয়ে দিবি ?
তবেই আমি তোর হব
ভদ্র হব শান্ত হব
আপন মনে অনন্তকাল
তোকেই ভালোবেসে যাব…
বুজলি ?
এ আমার ভালবাসা এখন তো তা জানলি,
বলনা আমায় বুকে ধরে রাখবি?
আর কি দুরে থাকবি ?
দুনিয়া বড় হৃদয় আমার
কোথায় বল আর পালাবি ?