মেট্রো নিউজ : বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠকও হয়নি গত এক বছরে। সারাদেশে ছাত্রদলের কর্মকাণ্ড চলছে কমিটি ছাড়াই। পাস হয়নি সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের প্রস্তাবিত সংশোধনী। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে দেশে ফিরেই ‘অগোছালো’ ছাত্রদলের পুনর্গঠন সম্পন্ন করবেন বলে আশা করছেন সংগঠনটির একাধিক নেতা।
এক বছর পূর্ণ হলেও আংশিকভাবে ঘোষিত দু’বছর মেয়াদের কেন্দ্রীয় কমিটির আওতাধীন একটি ইউনিটও পুনর্গঠন হয়নি। গত বছর ১৪ অক্টোবর রাজিব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের ১৫৩ সদস্যের আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। আগের কমিটির কর্মকাণ্ড নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন খালেদা জিয়া ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাই রাজিব-আকরামুল কমিটি ঘোষণার আগে ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে বাছ-বিচার করেন খালেদা জিয়া নিজে। এক বছর পেরিয়ে গেলেও এ কমিটির উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড চোখে পড়েনি।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, বর্তমান কমিটি গঠনের পর পরই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু হয়। তাই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার সুযোগ মেলেনি। ২০ জুলাই সভাপতি রাজিব আহসানকে গ্রেফতার করায় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কাজ বিঘি্নত হচ্ছে।
তিনি জানান, গত বছর কেন্দ্রীয় সংসদের ২০১ সদস্যের মধ্যে ১৫৩ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। সহ-সম্পাদক ও সদস্য পদগুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে একটি প্রস্তাবিত তালিকা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের খসড়া কমিটিও চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। চেয়ারপারসন লন্ডন থেকে দেশে ফিরলেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ হবে বলে আশা করছেন নাজমুল।
যদিও চেয়ারপারসনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত তালিকা পাঠানো হয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত কমিটির শীর্ষ দুটি পদে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক পর্যায়ের দুই নেতাকে রাখার বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের পাশাপাশি পূর্ব ও পশ্চিম নামে আরও দুটি ইউনিট চালুর পরিকল্পনাও চলছে।
এদিকে ছাত্রদলের প্রচলিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটি হওয়ার কথা ১৫১ সদস্যের। কিন্তু চলতি কমিটির (আংশিক) সদস্য হবেন ২০১ জন।
এ ব্যাপারে সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বলেন, গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য কাউন্সিল করতে হবে; কিন্তু সরকার আমাদের সে সুযোগ দিচ্ছে না।
গত বছর আংশিকভাবে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হলেও ছাত্রদলের কোনো ইউনিট কমিটি পুনর্গঠন হয়নি। সাত-আট বছর ধরে পুনর্গঠন হয় না ছাত্রদলের জেলা কমিটিগুলো। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমিটি নেই। দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় পালিত হয় না কেন্দ্রীয় কর্মসূচি। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়ছে।