বঙ্গবন্ধুর নাম কেউ কখনো মুছে ফেলতে পারবে না

পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ সৃষ্টি হতো না। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট খুনি মোশতাক, জিয়াউর রহমান গংরা মনে করেছিল জাতির পিতাকে হত্যা করে তার নাম মুছে ফেলবে। কিন্তু তার নাম মুছে ফেলা যায়নি। কারণ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের হৃদয়ে। কাগজের নাম ছিঁড়ে ফেলা যায়, দেয়ালের নাম মুছে ফেলা যায়, কিন্তু হৃদয়ে লেখা নাম মুছে ফেলা যায় না। কেউ কখনো মুছে ফেলতে পারবে না। এটা সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে  রাজধানীর পানি ভবন মাল্টিপারপারস হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন ।

উপ-মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র নেতা যিনি প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি না হয়েও যা বলতেন তৎকালীন পূর্ব বাংলার সাড়ে ৭ কোটি মানুষ তাই করতেন। এটা একদিনে হয়নি। ধাপে ধাপে ধীরে ধীরে হয়েছে— আটচল্লিশ, বায়ান্ন, বাষট্টি, ছিষট্টি, ঊনসত্তর, একাত্তরে। বঙ্গবন্ধুকে অনেকেই মহাত্মা গান্ধী, কায়েদ-ই-আজমসহ অনেক বিশ্ব নেতার সঙ্গে তুলনা করেন। মহাত্মা গান্ধী কিন্তু কংগ্রেস সৃষ্টি করেন নাই। কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। কায়েদ-ই-আজম মুসলিম লীগ সৃষ্টি করেন নাই। মুসলিম লীগে যোগ দিয়েছিলেন। আর বঙ্গবন্ধু হচ্ছে পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল একজন নেতা যিনি একটি রাজনৈতিক দলকে তিলে তিলে গড়ে তুলে সেই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে একটি দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। সেই দেশের নাম হচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি বলেছিলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না মানুষের অধিকার চাই। আসলে তিনি স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সংগ্রাম করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তিনি হতে পারেতনই। মন্ত্রীত্ব থেকে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার জন্য। কারণ তাঁর লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। তার লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে তিলে তিলে গড়ে তুলে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। এবং পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের বিজয়ী হতে হবে। আর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে।

এনামুল হক শামীম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে অনেকে আব্রাহাম লিংকনের গেটিসবার্গের ভাষণের সঙ্গে তুলনা করেন, আরও অনেক ভাষণের তুলনা করেন। আসলে এই ভাষণের সঙ্গে অন্য কোনও ভাষণের তুলনা হয় না। একটি জাতিকে গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে মুক্ত করার জন্য, স্বাধীন করার জন্য, যা কিছু করার দরকার তিনি তা করেছিলেন। চিন্তা করেন একটি বাক্য যদি ভুল হতো সেখানে অনেক কিছুই হয়ে যেতে পারতো।

আওয়ামীলীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল কিন্তু বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আজ বিচার হয়েছে। এর মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মুখচ্ছবি, তিনি চিরঞ্জীব। যারা বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছে তারাই ইতিহাস থেকে মুছে গেছে। সেই খুনিদের অনুসারীরা এখনো বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্তে লিপ্ত। খুনি জিয়া সেভাবে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন করেছে, তেমনি তার স্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাধীনতা বিরোধীদের এমপি মন্ত্রী করেছে। তাই এদেশের মানুষ আর কোনদিন বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এদেশের মানুষ একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেই নিরাপদ। তাই উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যহত রাখতে জনগণ আগামী নির্বাচনে পঞ্চমবারের মতো জননেত্রী শেখ হাসিনাকেই ক্ষমতায় আনবে।

পাউবো বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের  সভাপতি প্রকৌশলী ড. মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গেষ্ট অব অনার ছিলেন, আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, আইবি’র সাধারন সম্পাদক প্রকৌশলী এস.এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, পাউবো’র মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম সরকার। বক্তব্য রাখেন, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. নুরজ্জামান।

Print Friendly

Related Posts