কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্যের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সর্বস্তরের মানুষ।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে শমরিতা হাসপাতাল মর্গ থেকে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ শহীদ মিনার চত্বরে নেয়া হয়।
এরপর পঙ্কজ ভট্টাচার্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাজধানীর পোস্তগোলা মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
এর আগে রোববার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য। ৮৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিক শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন।
১৯৩৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। শিক্ষাজীবন কেটেছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে ১৯৫৯ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন।
পঙ্কজ ভট্টাচার্য গত শতকের ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী বাংলাদেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী, একজন নেতৃস্থানীয় কর্মী ও সংগঠক। ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও পরে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হন পঙ্কজ। তিনি ১৯৬৬ সালে ‘স্বাধীন বাংলা ষড়যন্ত্র’ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারারুদ্ধ হন।
পঙ্কজ ভট্টাচার্য মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা বাহিনীর সংগঠক ছিলেন। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৯৩ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরাম গঠনের সময় তিনি ছিলেন দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। পরে সম্মিলিত ‘সামাজিক আন্দোলন’ নামে দেশের প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক মানুষের একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলেন। ২০১৩ সালে তিনি ঐক্য ন্যাপ নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।