চহ্লা মং মারমা : বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা উৎসব আজ। এ পূর্ণিমা বৌদ্ধদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং অতি পবিত্র। বৌদ্ধ দেশগুলোয় আজ থেকে ত্রৈমাসিক বর্ষাবাস ব্রতের শুরু।
এ পূর্ণিমার একটি বিশেষত্ব হলো, এই শুভ তিথিতেই রাজকুমার সিদ্ধার্থ রানি মহামায়ার গর্ভে প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেন। বুদ্ধত্ব লাভের পর এ দিবসেই তিনি তার নবলব্ধধর্ম ‘ধর্মচক্র প্রবর্তনসূত্র’ রূপে পঞ্চবর্গীয় শিষ্যের কাছে প্রথম প্রচার করেন।
এ পূর্ণিমার আরও গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এ শুভ তিথিতেই ভগবান বুদ্ধ শ্রাবস্তীর গণ্ডম্ব বৃক্ষমূলে প্রতিহার্য প্রদর্শন করেন এবং মাতৃদেবীকে দর্শন ও ধর্মদেশনার জন্য তাবতিংস স্বর্গে গমন করেন। রাজকুমার সিদ্ধার্থের জন্মের পরই রানি মহামায়ার মৃত্যু হয়েছিলো।এ কৃতজ্ঞতাবোধে তিনি তার প্রাপ্ত ধর্মজ্ঞান তার মাতৃদেবীকে বিতরণ তথা দর্শনের জন্যই স্বর্গে গিয়েছিলেন। রানি মহামায়ার মৃত্যুর পর তার কনিষ্ঠ বোন গৌতমীই পরবর্তীকালে রাজকুমার সিদ্ধার্থকে লালন-পালন করেন। এ জন্য সিদ্ধার্থের অপর নাম হয়েছিলো গৌতম।
গৌতম বুদ্ধ যেমন নিজ প্রচেষ্টায় জীবনের পূর্ণতা সাধন করে মহাবোধি বা আলোকপ্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং জগজ্জ্যোতি বুদ্ধত্বপ্রাপ্ত হন তেমনিভাবে পূর্ণ চন্দ্রের মতো নিজের জীবনকে ঋদ্ধ করাই প্রতিটি বৌদ্ধের প্রচেষ্টা। আষাঢ়ী পূর্ণিমা’র অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধরা এই প্রচেষ্টার প্রতি তাদের অঙ্গীকার নবায়ন করে থাকে। শুধু সাধারণ বৌদ্ধ নয়, ভিক্ষুদের জন্যও আষাঢ়ী পূর্ণিমা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। বৌদ্ধরা এদিনটিকে সচরাচর শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা হিসেবে অভিহিত করে থাকে।
ভিক্ষুদের অন্যতম বাৎসরিক আচার বর্ষাবাস শুরু হয় আষাঢ়ী পূর্ণিমাতে, শেষ হয় আশ্বিনী পূর্ণিমাতে। যে বিহারের ভিক্ষু বর্ষাবাস যাপন করবে না, সেই বিহারে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানও করা যাবে না। বর্ষাবাসের জন্য ভিক্ষুরা সাংঘারা, বিহার ও সাধনাকেন্দ্র বেছে নেয়।
এদিকে ভিক্ষুদের পাশপাশি গৃহীরা ও এ ৩ মাস বর্ষাবাস পালন করে থাকেন।