আজ বিশ্ব ওজোন দিবস। ওজোন স্তরের ক্ষয় ও তার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা তৈরিতে প্রতি বছর ১৬ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালন করা হয়। ওজোন স্তরের ক্ষয় রোধে সবাইকে সমান সচেতন হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। ওজোনস্তরের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষয় হলে পৃথিবীর কোনো প্রাণিই বেঁচে থাকার সক্ষমতা হারাবে।
দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়ন করি-ওজোন স্তর রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করি’।
১৯৮৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর ক্ষয়ের জন্য দায়ী দ্রব্যগুলো ব্যবহার নিষিদ্ধ বা সীমিত করার জন্য ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় ওজোনস্তর ধ্বংসকারী পদার্থের ওপর মন্ট্রিল প্রটোকল গৃহীত হয়। বাংলাদেশ ১৯৯০ সালে এই প্রটোকলে স্বাক্ষর করে। এরপর থেকে বাংলাদেশেও দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে।
এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, ‘শীতলীকরণ শিল্পে ব্যবহৃত ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি) গ্যাসসহ মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারণে ওজোনস্তর আজ হুমকির সম্মুখীন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ওজোনস্তরের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষয় হলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে মানবদেহে ক্যান্সার, রোগ প্রতিরাধ ক্ষমতা হ্রাসসহ উদ্ভিদ ও প্রাণিজগত হুমকির সম্মুখীন হবে। ওজোনস্তর রক্ষায় তাই সিএফসি গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত সংবেদনশীল ছিলেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির পর তিনি অন্যান্য গুরুদায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশব্যাপী বনায়ন ও উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা মন্ট্রিল প্রটোকল যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠনের ফলে আমরা ওজোনস্তর পুনর্গঠনে নানামুখী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা ইতোমধ্যে দেশে এইচসিএফসি, হ্যালন, মিথাইলক্লোরোফরম, মিথাইল ব্রোমাইড ইত্যাদি ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছি। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ মন্ট্রিল প্রটোকল সফলভাবে বাস্তবায়নের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি), ওজোন সচিবালয় ও বিশ্ব কাস্টমস অ্যাসোসিয়েশন যথাক্রমে ২০১২, ২০১৭ ও ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে প্রশংসামূলক সনদপত্র (সার্টিফিকেট অব এপ্রিসিয়েশন) প্রদান করেছে, যা আমাদের সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।’
বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে আজ (শনিবার) রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে রাস্তা থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।