ব দ রু জ্জা মা ন জা মা ন
আকাশে সেদিন সূর্য হাসছিল
সমুজ্জ্বল আলোকিত দিবসের হাসি
আমাদের তন্দ্রাহীন দেহ মনে জেগেছিল শুভ্র সকাল।
প্যারিসের প্রচন্ড কোলাহল ভেদ করে
আমরা প্রলম্বিত সড়ক দিয়ে জিভেখনি যাচ্ছিলাম
দু”পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মোনিযুগের অট্টালিকাসমূহে যেন
প্রতিধ্বনি হচ্ছিল “ইম্প্রেশনিজম আন্দোলনের স্লোগান।
বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ পেরিয়ে গ্রামের মেঠোপথ বেয়ে
আমরা পৌঁছলাম নরমন্দির জিভেখনি গ্রামে,
ছায়া সুনিবিড় বাহারি রঙের সজ্জিত ফুলের পরতে পরতে
ক্লদ মোনির আবেগ নিবিষ্ট নিঃশ্বাসের গন্ধ পাচ্ছিলাম আমরা ।
জিভেখনি যে বাড়িতে বসে ক্লদ মোনি এঁকেছিলেন
তার বিখ্যাত অনেক চিত্রকর্ম…,
জিভেখনির যে বাড়িটি আজো তাঁর স্মৃতিকর্ম বহন করে
কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
আমাদের মত হাজার হাজার শিল্পমোদি
দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয় প্রতিদিন।
অথচ একদিন তাঁর “ইম্প্রেশন সানরাইজ” বিদ্রুপের শিকার হয়েছিল
নিন্দুকেরা চিত্রকর্মের রীতিভাঙ্গা জাগরণকে বলেছিল- “ইমপ্রেসনিজম”
সময়ের ব্যবধানে আজ তা কালোত্তীর্ণ ।
নদীতে ভাসমান নৌকা, ভোরের আকাশে উদিত সূর্য
নদীর পানিতে এই চিত্রগ্রহণ কেবল
মোনির রঙ তুলির নিখুঁত আঁচড়ে উঠে এসেছিল সেদিন।
আমরা দেখছিলাম তাঁর বুলভার্ড দে ক্যাপুসিনেস,
ইমপ্রেশন সানরাইজ সিরিজসহ বিখ্যাত চিত্রকর্মসমূহ ,,,।
হঠাৎ আমার মনে এক ধরনের ইমপ্রেশন চলে আসে
সতীর্থদের নিয়ে চলে এলাম পাশের কফির দোকানে
আমরা পাঁচজন এক টেবিলে যেন একান্নবর্তী
সৌখিন কফির পেয়ালায়
হঠাৎ ভাবনার সবদ্বার যেন বন্ধ হয়ে গেল
মনে হল এখন শুধু অনুভব…
অনুভূতিতে প্রবাহিত হলো শিল্প প্রকৃতির সুখ সঙ্গমতা
আমাদের পাঁচজোড়া চোখ এক টেবিলে পঞ্চমাত্রিক অনুভবে
আর সৌখিন কফির পেয়ালায় প্রতিটি চুমুকে ছিল
শিল্পপ্রকৃতির সুখ সঙ্গমতা।