মো. ইমরান: গাছের মগডাল থেকে নিচ পর্যন্ত চড়ুইয়ের ছড়াছড়ি, যেন চড়ুই পাখির মেলা। এমন দৃশ্য পটুয়াখালীর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার ইলিশ পার্কের।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেই চড়ুই পাখির কিচিরমিচর শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে ওই এলাকা।
পটুয়াখালীর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকদের বিনোদনে নতুন মাত্রা যোগ করতে পৌর শহরের ৩ নং ওয়ার্ডে ২০১৫ সালে নির্মাণ করা হয় এ ইলিশ পার্ক। তখনই এ পার্কে রোপণ করা হয় তিনটি বকুল গাছ সহ বেশ কিছু ফুল গাছ। গত দুই বছর ধরে এসব গাছ চড়ুই পাখির আবাসস্থলে পরিনত হয়েছে।
প্রতিদিন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই এসব গাছে গাছে জমে ওঠে চড়ুই পাখির মেলা। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত চড়ুইয়ের কিচিরমিচর শব্দে মুখরিত থাকে ইলিশ পার্ক এলাকা। আলো-আঁধারে চড়ুইদের কিচিরমিচর শব্দ আর নাচানাচি দেখে মুগ্ধ পর্যটক ও স্থানীয় মানুষ।
ইলিশ পার্কে আসা পর্যটক ইয়ামিন মিয়া বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে কুয়াকাটায় এসেছি। পরে ইলিশ পার্কের কটেজের কক্ষে উঠেছি। এখানের পরিবেশ একটু আলাদা। এখানে ইলিশের পেটে বসেই ইলিশ মাছ খাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে দারুন লেগেছে চড়ুই পাখির কিচিরমিচির শব্দ। সকালে পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে এখানে।
আরেক পর্যটক ফরিদ মিয়া বলেন, এখানে আসলে খুলনার সাত রাস্তার ফিলটা পাওয়া যায়। কারণ ওখানেও অনেক চড়ুই পাখি রয়েছে। তবে রাতে গাছগুলোতে ঝাড়বাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আর এর মধ্যে চড়ুইরা একে অপরের সঙ্গে খুনসুটি করে। এদৃশ্য কোন দিনই ভোলার নয়।
কুয়াকাটা পৌর শহরের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হোসেন মিয়া বলেন, আমার ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাশ জুড়ে বেশ কিছু গাছপালা রয়েছে। এখানে বিকাল হলেই গাছের মগডালে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যায়। তবে ইলিশ পার্ক চড়ুই পাখির আবাসস্থলে পরিনত হয়েছে। এ রকমের কিচিরমিচির শব্দ আর কোথাও পাবেন না।
একই এলাকার অপর বাসিন্দা শাহআলম মিয়া বলেন, আগে কুয়াকাটায় প্রচুর গাছ ছিলো। অনেক পাখির বিচরণ ছিলো। কিন্তু এখন তেমন দেখা না গেলেও বিকালে ইলিশ পার্কে প্রচুর চড়ুই পাখি বসে। সকালে কিংবা বিকালে ইলিশ পার্কের পাশ দিয়ে হাঁটলে চড়ুই পাখির কিচিরমিচির শব্দ শোনা যায়।
কুয়াকাটা ইলিশ পার্কের স্বত্তাধিকারী রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, গত দুই বছরে চড়ুই পাখির অবাধ বিচরণে কখনো বাধা দেওয়া হয়নি। তবে এসব পাখি যাতে এখান থেকে চলে না যায় সেজন্য পরিবেশ সৃষ্টিসহ আমরা খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। এছাড়া পাখিগুলোর যাতে কোন প্রকার সমস্যা না হয় সেজন্য আমি এবং আমার কটেজের কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখছি।