আজ পহেলা কার্তিক

আজ পহেলা কার্তিক। অর্থাৎ হেমন্তেরও প্রথমদিন। প্রকৃতির পালা বদলে শুরু হলো হেমন্তকাল। কার্তিক-অগ্রহায়ণ এই দুই মাস হেমন্ত। শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে হাজির হলো এ ঋতু। হেমন্তকে স্বাগত।

অবশ্য হেমন্তে গরম ও শীত এ দুয়েরই মেলবন্ধন থাকে। হেমন্তের ভোরে দেখা মেলে হালকা কুয়াশা এবং শিশিরে ভিজে থাকে ঘাস। তারপর সূর্যের তীব্রতা যত বাড়ে, অনুভূত হয় গরম। হেমন্তের শেষে আস্তে আস্তে জানান দেয় শীত আসছে। এ সময় খেজুরের রস সংগ্রহে প্রস্তুতি নেয় গাছিরাও।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন আস্তে আস্তে তাপমাত্রা কমবে। দেশের উত্তরাঞ্চলে অল্প অল্প ঠাণ্ডা পড়তে শুরুও করেছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ভালো করে শীত পড়া শুরু করবে।

হেমন্তের প্রকৃতি মিষ্টি সোনা রোদ মাখা। নীল আকাশ। প্রকৃতিও প্রগাঢ় সবুজ। গ্রীষ্মের মাটি ফাটানো দাবদাহ নেই, বর্ষার অঝোর ধারায় ভিজে যাওয়াও নেই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপলব্ধিতে ঋতু হেমন্ত এ রকম- ‘আজি হেমন্তের শান্তি ব্যাপ্ত চরাচরে/ জনশূন্য ক্ষেত্র মাঝে দীপ্ত দ্বিপ্রহরে/ শব্দহীন গতিহীন স্তব্ধতা উদার/ রয়েছে পড়িয়া শ্রান্ত দিগন্ত প্রসার/ স্বর্ণশ্যাম ডানা মেলি।’

এক সময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। সম্রাট আকবর অগ্রহায়ণ মাসকেই বছরের প্রথম মাস বা খাজনা তোলার মাস ঘোষণা দিয়েছিলেন। কারণ, ধান উৎপাদনের ঋতু হলো এই হেমন্ত। হেমন্তের প্রথম মাস কার্তিকে ধানে পাক ধরে। কার্তিকের শেষ দিকে গ্রামের মাঠে মাঠে ধান কাটার ধুম পড়ে যায়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে পাকা ধানের গন্ধে মৌ মৌ গন্ধ।

জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা লেগেছে বাংলাদেশের ষড়ঋতুতে। ঋতুর উপস্থিতিতে ঘটছে তারতম্য। তারপরও কী কমে গেছে হেমন্তের আবেদন! এখনো হেমন্ত হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে আমাদের!

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts