হুমায়ূন কবীর ঢালী কলেজ জীবন থেকে লেখালেখি শুরু করেন। মূলত প্রেমের গল্প-উপন্যাস দিয়ে সাহিত্যে পদার্পণ করেন। পরবর্তীতে শিশুসাহিত্যের প্রতি নিবেদিত হন । শিশুসাহিত্যিক হিসেবে তিনি দেশে ও দেশের বাইরেও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তার লেখা শিশুসাহিত্য পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বিদেশের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাঁর একাধিক গ্রন্থ। গ্রিসের স্কুল পাঠ্যসূচিতে তার লেখা A Cowboy And A Magic Mango Tree ও The Birthday Gift শিশুতোষ বইদুটো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও ওড়িশা ভাষায় তাঁর একাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে । এছাড়া অসমীয়, হিন্দী ভাষার একাধিক পত্রিকায় হুমায়ূন কবীর ঢালীর গল্প প্রকাশ হয়েছে।
তিনি একটি শক্তিশালী রিডিং সোসাইটি গড়ে তোলার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন থেকে পাঠাগার আন্দোলনের সাথে জড়িত। নিজ গ্রামে গড়ে তুলেছেন ‘আমাদের পাঠাগার’ নামে একটি পাঠাগার। যেখানে সবাই বিনামূল্য বই পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। বইপাঠে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষে শিশুদের মাঝে নিয়মিত বিনামূল্যে বই বিতরণ করে আসছেন। একজন সংগঠক হিসেবেও রয়েছে শিশুসাহিত্যিক হুমায়ূন কবীর ঢালীর বিশেষ পরিচিতি। তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত। তিনি বাংলাদেশ শিশুসাহিত্যিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ঢাকা সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্টাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাঠাগার নির্মাণে ভূমিকা পালন করছেন।
তার লেখা প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা শতাধিক। এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো, একাত্তরের মিলিটারি ভূত, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের গল্প, পিতাপুত্র, বিশটি কিশোর গল্প, ক্লাসমেট, লজিংবাড়ি, এক যে ছিল হাঙ্গর, কালোমূর্তি রহস্য, কাব্য ও অ্যাঞ্জেলের বন্ধুরা, আলাভোলা ছেলেবেলা, ডিয়াওয়ালা, দুষ্ট ছেলের গল্প, কাকের ছা কঙ্কাবতী, সব লেখা ছোটদের, কিশোরসমগ্র ১, ২, টিয়া পাখির জন্মদিনে, The birthday gift, A cowboy & a magic mango tree, নীলগ্রহের রহস্য, নীলচরের ভূত, পারিকন্যা, বিলাইসমগ্র, আয় ফিরে যাই, জার্নি টু তাজমহল (ভ্রমণকাহিনি), বাঙালের আমেরিকা দর্শন (ভ্রমণকাহিনি), ব্রিজ টু কানাডা (ভ্রমণকাহিনি), উড়ে যাই দূরে যাই (ভ্রমণগল্প), যুদ্ধরোদন (গল্পগ্রন্থ)।
শিশুসাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন দেশ এবং দেশের বাইরে অসংখ্য পুরস্কার। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য, সালেহীন মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড (২০০৬), অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক[২] (২০০৬), সালেহীন মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড (২০০৬), কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ স্মৃতি স্বর্ণপদক (২০০৭), চিলড্রেন অ্যান্ড উইমেন ভিশন ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড (২০০৭), নওবাব ফয়ুজুন্নেসা স্বর্ণপদক (২০০৮), পদক্ষেপ শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০১১), মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড (২০১২), এম নূরুল কাদের ফাউন্ডেশন শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০১৩), লোকছড়া ফাউন্ডেশন কলম সৈনিক পুরস্কার (২০১৩), কবি সংসদ বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০১৩), বিশাল বাংলা সাহিত্য পুরস্কার (২০১৬), এবিটিভি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড সম্মাননা (২০১৬), সাহিত্য দিগন্ত লেখক পুরস্কার (২০১৭), ঝুমঝুমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০১৮), লিটল ম্যাগ পথিক শিশুসাহিত্যিক পুরস্কার, রংপুর বিভাগীয় সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা (২০১৯), সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা (২০১৮) চাঁদপুর, চোখ সাহিত্য পুরস্কার (২০১৩) পশ্চিমবঙ্গ, তোরষা সাহিত্য সম্মাননা (২০২০)কোচবিহার, লেখালেখি সাংস্কৃতিক সংস্থা সাহিত্য সম্মাননা (২০১৯) ওডিশা, স্রোত সাহিত্য পুরস্কার (২০২৩) ত্রিপুরা।
-ইসলাম পারভেজ