যাত্রী-যানবাহন নিয়ে পদ্মায় ডুবলো ফেরি রজনীগন্ধা

বাল্ক‌হে‌ডের ধাক্কায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে মাঝনদীতে রজনীগন্ধা ফেরিডুবির ঘটনা ঘটেছে। উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। আজ বুধবার এ ঘটনা ঘটে।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম খালেদ নেওয়াজ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আজ বুধবার সকালে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটের কাছে বাল্কহেডের ধাক্কায় রজনীগন্ধা নামে একটি ইউটিলিটি ফেরি ডুবে গেছে। ফেরিতে সাতটি ছোটো ট্রাক ও দুটি বড় ট্রাক ছিল। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দুইটা থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, আরিচা-কাজিরহাট ও ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। যা বুধবার সকালেও চালু হয়নি। এ অবস্থায় পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটের কাছাকাছি অবস্থানে থাকা ফেরি রজনীগন্ধা পদ্মায় ডুবে যায়।’

এদিকে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুর রহমান বলেন, ‘রাত থেকেই এই নৌ-রুটে কুয়াশা পড়তে শুরু করে। এতে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। পরে রাত দেড়টার দিকে কুয়াশার মাত্রা আরও ঘন হয়। এতে ফেরি চলাচলের মার্কিং পয়েন্ট ও বিকনবাতির কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এ সময় দুর্ঘটনা এড়াতে রাতে এই নৌরুটে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর আসেনি। ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের বাণিজ্য শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাম হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত একটার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রজনীগন্ধা ফেরিটি নয়টি গাড়ি নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে ফেরিটি মাঝ নদীতে নোঙর করে রাখা হয়। সকাল আটটার দিকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয়। পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের কাছে এলে বাল্কহেডের ধাক্কায় ফেরিটি ডুবে যায়।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফেরিটি ডুবে যাওয়ার সময় যাত্রীদের আর্তচিৎকার শোনা যেতে থাকে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের উদ্ধারকারী দলকে জানানো হয়

এদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ঘন কুয়াশার কারণে আটকে থাকা ‘রজনীগন্ধা’ নামের ওই ফেরিটি বাল্কহেডের ধাক্কায় নয় ফেরি কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে ডুবে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে ‘রজনীগন্ধা’ নামে ওই ফেরি দুর্ঘটনার পর ফেরিতে থাকা এক ট্রাকচালক এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার সময় ফেরিতে ছিল শুধু ট্রাক। আমরা পাঁচজন একটি ট্রাকে ছিলাম। কোনো বাল্কহেডের ধাক্কার ঘটনা ঘটেনি; এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা কথা। এখানে কেউ কাউকে ধাক্কা দেয়নি। আমরা রাতে নদীর ওই জায়গায় নোঙর করে ছিলাম।’
তাহলে দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ দুর্ঘটনা বাল্কহেডের ধাক্কা নয়, ফেরি কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে ঘটেছে। এছাড়া ফেরিতে কোনো পানিও ওঠেনি।’
Print Friendly, PDF & Email

Related Posts