জ ই বুলবুল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আওয়ামীলীগের দুই মন্ত্রী আট সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের সাবেক দুই চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের তিন চেয়ারম্যানসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ২৪০ জন নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ২০০-৩০০ জনকে ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার শেরপুরের বাসিন্দা আনিছুর রহমান বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় নাশকতা ও বিষ্ফোরক আইনে এই মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪-(কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ একে একরামুজ্জামান, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন মঈন, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান আলম সাজু ও অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) এবি তাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহআলম, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল আলম এমএসসি, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিসেস নায়ার কবির, সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান বাবুল, সহ-সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন খাঁন খোকন, সহ-সভাপতি ডা. আবু সাঈদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, সাংগঠনিক শেখ মো. মহসিন ও তানজিল আহমেদ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিনারা আলম, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি কাউছার আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ডা. ডিউক, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ এইচ মাহবুব আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রুবেল, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলী আজম, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন রানা, কসবা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়ছার ভূঁইয়া জীবন, আখাউড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েলসহ ২৪০ জন।
এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
এজাহারে মামলার বাদী আনিছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, মামলার আসামিরা গত ৪ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ জনগণকে মারধর করেন। তারা এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদলের নামে মামলার কারণে তার এলাকায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তার নির্বাচনী এলাকায় যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন কোন মামলা হয় নি তিনি দলমত নির্বিশেষে মানুষের আস্থা নির্ভর হয়ে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে সবারই প্রিয়ভাজন ছিলেন বলে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা অভিমত জানান, এবং এ মামলায় তীব্র নিন্দা প্রস্তাব জানান।