সমবায় খাতের একটি নিরপেক্ষ পর্যালোচনা

আতিকুর রহমান

রীতি অনুযায়ী প্রতিবছর নভেম্বর মাসের প্রথম শনিবার জাতীয় সমবায় দিবস পালিত হয়। এবছর ৬ নভেম্বর শনিবার ৫০তম জাতীয় সমবায় দিবস। দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য- বঙ্গবন্ধুর দর্শন সমবায়ে উন্নয়ন।প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দেশব্যাপী সরকার-সমবায় সম্মিলিত উদ্যেগে আড়ম্বরপূর্ণভাবে সমবায় দিবস পালিত হবে। দিবস উদযাপনের সরকারি অনুষ্ঠানে সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ সমবায়ী ও শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতির পুরষ্কারও দেয়া হবে। বাংলাদেশে সমবায়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯০৪ সালে। তো দিবস উদযাপনের প্রাক্কালে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণে এক’শ সতের বছর আগে যাত্রা শুরু করা দেশের সমবায় খাতের সার্বিক চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যাক।

সমবায় অধিদপ্তরের সর্বশেষ আপডেটকৃত(মার্চ-২০২১ পর্যন্ত) তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে মোট নিবন্ধিত সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় ১,৯৬,১৫৪টি। এর মধ্যে প্রাথমিক সমবায় সমিতির সংখ্যা ১,৯৪,৯২৩টি। কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সংখ্যা ১,২০৯টি এবং জাতীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সমবায় সমিতির সংখ্যা ২২ টি । সমবায় সমিতি সমুহের ব্যক্তি সদস্য সংখ্যা প্রায় ১১৬৪৯৩০৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৮৯৪১৭৩৪ জন ও মহিলা ২৭০৭৫৭৩ জন। মোট সম্পদের পরিমাণ ৬৭০১১৮.৬৫ টাকা। সমবায়ের মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে ৯৬৭৬৬৪ জনের।
সমবায় অধিদপ্তরের উপরোক্ত সমিতির সংখ্যাগত পরিসংখ্যান অনেকটা “অনেকটা কাজীর গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নেই ” প্রবাদ বাক্যের মত। কেননা, বিআইডিএস এর এক দশক আগের গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে নিবন্ধিত সমবায় সমিতি সমূহের ৫৩ শতাংশেরই অস্তিত্ব নেই । বর্তমানে অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। আবার বিদ্যমান সমবায় সমিতির মধ্যে কিছু সাইনবোর্ড সর্বস্ব টিকে আছে। কোনটা আবার খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। কিছু সমিতি অবশ্য স্বমহিমায় টিকে আছে। নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বাংলাদেশে অবশ্য দুই ধারার সমবায় ব্যবস্থা বিদ্যমান। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা মূলধারার সমবায় এবং ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিকল্প ধারার সমবায়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা সমবায় এক সময় দেশে দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতা অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে । দেশের কৃষি সমবায় ছিল বিশ্ব সমবায় অঙ্গনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মত। ‘‘সেইদিন আর নাইরে নাতি, গৃহে এখন আর জ্বলেনা বাতি ” সমবায়ের অবস্থা এখন এমনই। বিআরডিবি আওতাধীন কৃষক সমবায় সমিতির অধিকাংশেরই এখন অস্তিত্ব নেই। ইউসিসিএ গুলোর নিজস¦ সম্পদ থাকায় এবং সরকারী কিছু অর্থ সহায়তা থাকায়-এখনো অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। অনুরুপ সরকারি স্যালারি সাপোর্ট ও অনুদান থাকায় জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশনের অফিসে এখনো আলো জ্বলে। অথচ বাংলাদেশে এখনো কৃষি সমবায়ের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। সারা দেশে বিদ্যমান ইউসিসিএ সমুহের স্থাপনা ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি খাতে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

অন্যদিকে জাতীয় শিল্প সমবায় সমিতি, জাতীয় মৎস্য সমবায় সমিতি, জাতীয় মার্কেটিং সমবায় সমিতি, জাতীয় সমবায় শিল্প সংস্থা, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লি:, ৭৭টি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক, ভূমি উন্নয়ন ব্যাংকসহ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা সমবায় সমিতিগুলোর প্রচুর স্থাবর অস্থাবর সম্পদ নিয়ে কোন কার্যক্রম ছাড়া সাইনবোর্ড সর্বস্ব টিকে আছে। সমিতিসমুহের সম্পদ বেহাত বেদখল হয়ে যাচ্ছে। সমিতির যেহেতু আয় আছে সেহেতু কর্মচারী ও ব্যবস্থাপনা কমিটি আছে। কিন্তু তাদের মৌলিক কোন কার্যক্রম নেই। আবার এই সমিতিগুলো সমবায়ীদের আয়ত্তে নেই। ক্ষমতা যার সমবায় তার-এই নীতিতে চলছে ।

আবার বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক, সকল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের প্রচুর স্থাবর অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক ও ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে ঋণ প্রদানের জন্যে গঠিত হয়েছিল কিন্ত সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলো সে লক্ষ্যে চলছে না।ব্যাংকসমূহে যদিও সরকারের ৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে তথাপিও সরকারের এখন তেমন কোন পৃষ্ঠপোষকতা বা নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। তাদের মূল কার্যক্রম তথা কৃষি ঋণ কর্মসূচি এখন নেই বললেই চলে। ব্যাংকগুলো তাদের লক্ষ্য উদ্দেশের বাইরে গিয়ে স্বর্ণ বন্ধকী ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কোন কোন প্রতিষ্ঠান আইনবহির্ভূত আমানত গ্রহণ ও ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক কে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক ব্যাংকে রুপান্তরের জন্যে সমবায়ীদের দীর্ঘ দিনের দাবি আজও আমলে নেয়া হয়নি। ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কেন সমবায় ব্যাংক কে পূর্ণাঙ্গ তফসিলি বাণিজ্যিক ব্যাংকে রুপান্তরিত করা হচ্ছেনা তা বোধগম্য নয়। বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এলায়েন্স (আইসিএ) এর বিশেষায়িত অঙ্গ সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকিং এসোসিয়েশনের সদস্য।

বিমা খাতে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও খুব একটা অগ্রসর হতে পারেনি। বাংলাদেশে বিমা খাতে সমবায়ের যাত্রা অনেক বিলম্বে হয়েছে। ১৯৮৪ সালে সমবায় খাতের বিশিষ্ট জনের উদ্যোগে একটি সমবায় জীবন বিমা ও একটি সমবায় সাধারণ বিমা কোম্পানি যাত্রা শুরু করে। শুরুতেই মুখ থুবরে পড়ে সমবায় জীবন বিমা কোম্পানিটি।

আর সাধারণ সমবায় বিমা কোম্পানি তথা বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স লি. প্রায় চার দশক গত হলেও ভাড়ায় চালিত প্রধান কার্যালয় ও কয়েকটি শাখা নিয়ে কোন মতে অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করে চলছে। যথাযথ পরিকল্পনা, উদ্যোগ, দক্ষ নেতৃত্বের অভাব, অনিয়ম ও অব্যবস্থার কারণে সমবায় বিমা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। বাংলাদেশে সমবায় বিমা খাতের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। প্রয়োজন কেবল যথার্থ উদ্যাঁগ।

মোটের মধ্যে দুগ্ধ সমবায় কাঙ্খিত অবস্থানে না থাকলেও তা দেশের সমবায় খাতের জন্যে সবে ধন নীলমণি।বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লি. বা মিল্কভিটা সচল থাকলেও কার্যক্রম প্রত্যাশিত মাত্রায় চলছে না। যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে মিল্ক ভিটা ভারতের আমুল’র মত শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লি. বা মিল্কভিটা’র কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করা হলে দুগ্ধ শিল্পে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। আমদানীকারকের স্থলে দুগ্ধ পণ্য রপ্তানীকারক হবে বাংলাদেশ।

অন্যদিকে মৎস্য, শিল্প, বিপণন সমবায় খাতের এখন করুণ অবস্থা। এক কালের ব্যাপক ক্রিয়াশীল বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি:, বাংলাদেশ জাতীয় শিল্প সমবায় সমিতি, বাংলাদেশ সমবায় শিল্প সংস্থা ও বাংলাদেশ জাতীয় মার্কেটিং কো-অপারেটিভ সোসাইটি এখন সাইনবোর্ড সর্বস্ব টিকে আছে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এক সময়ে সমিতিসমুহ স্ব স্ব ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখেছে। অথচ এখন প্রচুর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সঠিক উদ্যোগের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। সমিতিগুলোর সম্পদ বেহাত বেদখল হয়ে যাচ্ছে। দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা সমিতির ভূসম্পদ পানির দরে বিক্রি করে দিচ্ছে। এমনকি সমিতির জমিতে বহুতল ভবন নির্মানের জন্যে কোন সাইনিং মানি না নিয়ে প্রাইভেট ডেভেলপারকে ৮৪ ভাগ শেয়ার দিয়ে চুক্তি করার দৃষ্টান্তও রয়েছে। এরমধ্যে একটি সমিতির স্টাফদের বেতন মাসের পর মাস বাকি পড়ে আছে। অনেক স্টাফ চাকরির মেয়াদ শেষে অবসরে গেছেন ১/২ বছরের বেতন বাকি রেখে। বেতন, গ্রাচ্যুইটি বেনিফিট কিছুই পাচ্ছেন না। কেউ আবার বেতন গ্রাচ্যুইটি বেনিফিট বকেয়া রেখেই পরলোকে গমন করেছেন। কিন্ত সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি ঠিকই আছে। তাদের বোর্ড মিটিং, আপ্যায়ন, সিটিং ফি, সম্মানী ঠিক মতই নিচ্ছেন।

বড় কথা মূলধারার এই সমবায় এখন আর সমবায়ীদের কোন উপকারে আসছে না।” খায় দায় হাশেম, মোটা হয় কাশেম”- এরকম অবস্থা । এই ধারার সমবায়ের উপকারভোগী এখন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারি আমলা ও স্বার্থান্বেষী মহল ।

এই নেতিবাচক চিত্রের পাশাপাশি সমবায়ে ইতিবাচক চিত্রও বিদ্যমান রয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা সমবায় অন্ধকারে আলোর মশাল নিয়ে এগিয়ে চলছে। সারা দেশে বিভিন্ন খাতে গড়ে উঠেছে সমবায় সমিতি। এই সমিতিগুলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র বিমোচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে । কিছু বহুমুখী সমবায় সমিতি, পেশাজীবী সমবায় সমিতি ও বিশেষায়িত সমবায় কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন, বিশেষ করে দেশে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের সমবায় সমিতি সমুহ সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আইনী বিড়ম্বনা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা সমবায় সমিতি স্বমহিমায় টিকে আছে। তবে এখানেও রয়েছে নানা সমস্যা। মসজিদে নামাজের জন্যে নামাজির পাশাপাশি যেমনি জুতা চুরির জন্যে চোরের আগমন ঘটে তেমনি সমবায়ীদের আমানত লোপাটের জন্যে এই ধারার সমবায়ে তষ্করের সমাবেশ ঘটেছে। তষ্করের দল জনগণের আমানত লোপাট করে লাপাত্তা হয়ে গেছে। আবার তারা সমবায়ের ছদ্মাবরণে অবৈধ ব্যাংকিং কার্যক্রম ও চড়া সুদের মহাজনী ব্যবসা করছে। সমবায়ীর ছদ্মাবরণে এরা নব্য কাবলিওয়ালা। আজিজ কো-অপারেটিভ, ডেসটিনি কো-অপারেটিভ, নিউওয়ে কো-অপারেটিভ এর মত তথাকথিত সমবায় সমিতিগুলো জনগণের আমানত আত্মসাত করে সমবায় সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দিয়েছে। সর্বোপরি, আইনি বিড়ম্বনা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা সমবায় সমিতি স্বমহিমায় টিকে আছে।

বাংলাদেশে সমবায় খাতের বিকাশে সমস্যা যেমন আছে তেমনি সম্ভাবনাও খুবই উজ্বল। যদিও সমবায় বান্ধব পরিবেশ আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্বেও কেবল বিশ্বের অপরাপর দেশই নয় ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের তুলনায়ও সমবায় ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সমবায় বান্ধব আইন ও পরিবেশ না থাকা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সমবায় সমিতি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ও অডিট কার্যক্রমে কর্মকর্তাদের ঘুষ গ্রহণ, জনগনের মধ্যে সমবায় সম্পর্কে সচেতনতা না থাকা; সমবায়ে স্বার্থান্বেষিদের অনুপ্রবেশ ও রাজনীতিকিকরণ, সরকারি অর্থ সহায়তা না থাকা, সমবায়ের আদলে এনজিও কার্যক্রম পরিচালনা ও সমবায়ের শীর্ষ সংস্থা বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের যথাযথ কার্যক্রম না থাকা সমবায় খাতের বিকাশে প্রধান অন্তরায়।

দারিদ্র বিমোচন ও স্বনির্ভরতা অর্জনের পরীক্ষিত পদ্ধতি সমবায়ের বিকাশে সমবায় বান্ধব আইন, প্রশাসন ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সমবায় অধিদপ্তরের “ঘুষ কালচার” বন্ধ করতে হবে। সমবায়ের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে নিয়মিত বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। সমবায় খাতে অর্থায়নের জন্যে ভারতের ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এনসিডিসি) এর আদলে কো-অপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন গঠন করা যেতে পারে। সমবায় খাতে ব্যাপকভাবে ঋণ প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্যে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক কে পূর্ণাঙ্গ তফসিলী বাণিজ্যিক ব্যাংকে রুপান্তর করা প্রয়োজন। জনগণের মধ্যে সমবায় সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে “সমবায় স্বাক্ষরতা” কর্মসূচী গ্রহণ করা প্রয়োজন। সমবায় গবেষণা ও লেখালেখি উৎসাহিত করার জন্য জাতীয় সমবায় পুরস্কারের ক্যাটাগরিতে গবেষণা ও সমবায় সাংবাদিকতা অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। সমবায় বিকাশে সমবায় উন্নয়ন তহবিলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সমবায়ের শীর্ষ সংগঠন জাতীয় সমবায় ইউনিয়নকে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে। সর্বোপরি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা নিস্তেজ নিস্ক্রিয় সমবায় সমিতিগুলোকে সক্রিয় করার জন্যে “সমবায় কমিশন” গঠন করা খুবই জরুরী।

প্রতিটি গ্রামে গড়ে উঠবে সমবায় সমিতি। সকল পরিবার আসবে সমবায়ের আওতায়। দেশের সকল নাগরিক হবে সমবায়ী। সমবায়ের মাধ্যমে নির্মিত হবে কৃত্রিম বৈষম্যহীন সম্প্রীতির সমাজ -এটাই আজকের দিবসের প্রত্যাশা।

লেখক:সাংবাদিক ও সমবায় গবেষক

Email: arahmanccs@gmail.com

 

Print Friendly

Related Posts