বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নয়ন হচ্ছে। তিনি না থাকলে পদ্মা সেতু তৈরি হতো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। চলমান এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার সরকারের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন ড. যশোদা জীবন দেবনাথ সিআইপি।
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ও রেলযোগাযোগ স্থাপনের জন্য পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু, তিস্তা সেতু, পায়রা সেতু, দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু, দ্বিতীয় মেঘনা, দ্বিতীয় গোমতী সেতুসহ শত শত সেতু, সড়ক, মহাসড়ক নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ করেছে সরকার।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন,এক পদ্মা সেতু দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে সড়ক পথে ঢাকা এবং অন্যান্য জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। এই সেতুর ফলে দেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, কৃষক ফসলের ন্যায্যম্ল্যূ পাচ্ছে। গত নভেম্বরে একদিনে ১০০ সেতু এবং ডিসেম্বরে ১০০ সড়ক উদ্বোধন করা হয়। দেশের উন্নয়নের ইতিহাসে এ এক অনন্য অর্জন।
তিনিও এই উন্নয়ন মহাযজ্ঞে একজন কর্মী হতে ফরিদপুর থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান।
তিনি বলেন, ফরিদপুরে প্রায় ১৮ শতাংশ সনাতন ধর্মালম্বী বসবাস করে। জামায়াত-বিএনপির সময় ফরিদপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কঠিন সময় পার করেছে। এই বিষয়টি চিন্তা করে এই জেলার নিট এন্ড ক্লিন ইমেজের মানুষ দরকার যা আমি ইতিমধ্যে বিবেচিত হয়েছি। আমি ফরিদপুর জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আস্থার জায়গায় রয়েছি।
এই জেলার অনেক নেতাকর্মীরা টেন্ডারবাজি করছে। উন্নয়নের নামে জনগণের টাকা আত্মসাৎ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারছে না। অপূরণীয় কাজগুলো করতে জনপ্রতিনিধি হওয়া প্রয়োজন। তাই আমি প্রত্যাশা করছি আমাদের মানবতার নেত্রী আমাকে যোগ্য মনে করে আমাকে যদি মনোনয়ন দেন তাহলে শতভাগ সফল হব।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ ২৭ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে ফরিদপুর জেলার ধোপাডাঙ্গা চাঁদপুরের অজপাড়াগাঁয়ে এক হতদরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দুই মেয়ের পরে প্রথম পুত্র সন্তান, তাই বাবা-মা তাকে আদর করে ‘জীবন’ বলে ডাকতেন। তার বাবার নাম প্রয়াত গোপাল চন্দ্র, তার মায়ের নাম শোভা রানী দেবনাথ, তার স্ত্রীর নাম সোমা দেবনাথ। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
তিনি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছেন ফরিদপুর রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার লেখাপড়ার সমাপ্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, ইউএসএ থেকে ব্যাংকিং এবং ফাইন্যান্স-এর উপরে ডক্টরেট ডিগ্রি এবং এন্ডাসগেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোপিয়ান প্রফেশনাল ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করার মাধ্যমে। ৬ বছর বাংলাদেশের স্বনামধন্য দুটি আইটি কোম্পানিতে চাকরি করার পর তিনি নিজেই ২০০১ সালে আইটি ব্যবসা শুরু করেন টেকনোমিডিয়া লিমিটেড নামে আমেরিকা বেজড্ একটি এটিএম কোম্পানি এনসিয়ার করপোরেশনের সঙ্গে।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ জীবনে অনেক বই লিখেছেন। এই লেখালেখির কাজ তিনি প্রতিনিয়তই অব্যাহত রেখেছেন। তার বইয়ের তালিকায় রয়েছে- ১. মহানায়কের ইতিকথা, ২. জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, উন্নয়ন, ৩. জীবন থেকে নেওয়া, ৪. পূর্ব পাকিস্তানের ভারতে গোপন নৌযুদ্ধের অপ্রকাশিত গল্প ১৯৭১ অপারেশন, ৫. জীবনপ্রদীপ জে¦লে, ৬. ফরিদপুরের মুক্তিযুদ্ধ, ৭. একটি তর্জনীর আত্মকথা।
রাজনৈতিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তিনি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফরিদপুর জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য।
তিনি ২০০১ সালে টেকনোমিডিয়া লিমিটেড প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। এছাড়াও তিনি ২০০৬ থেকে প্লাস্টিক কার্ড আইডি লিমিটেডের পরিচালক, ২০১১ সাল থেকে প্রোটেকশন ওয়ান (পিভিসি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ২০১২ সাল থেকে রাজেন্দ্র ইকো-রিসোর্টের পরিচালক, ২০১২ থেকে ইমপ্রুভমেন্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড পরিচালক, ২০১৩ সাল থেকে মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক-সিইও, ২০১৩ সাল থেকে টেকনো কনফিডেন্স সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ২০১৫ সাল থেকে ডাল্টা ফোর্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)-এর পরিচালক, ২০১৯ সাল থেকে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক, ২০১৯ সাল থেকে পে ইউনিয়ন বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ২০১৯ সাল থেকে শামপুর সুগার মিল লিমিটেডের পরিচালক, ২০১৯ সাল থেকে ব্যাংকিং লিজিং এন্ড সিক ইন্ডাস্ট্রি (বিসিআই)-এর চেয়ারম্যান, ২০২১ সাল থেকে সিআইএস-বিসিসিআই-এর পরিচালক, ২০২৩-২০২৫ সাল পর্যন্ত এফবিসিসিআই-এর সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সঙ্গে তিনি ২০২১-২০২৩ সাল পর্যন্ত এফবিসিসিআই-এর পরিচালকের দায়িত্ব ছিলেন।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ কর্মদক্ষতা ও অর্থনীতিতে অবদান রাখায় বাংলাদেশ সরকার থেকে অনেক স্বীকৃতি লাভ করেন। যেমন-২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু শিল্প পুরস্কারে ভূষিত হন, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০২১ সালে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) পুরস্কার লাভ করেন, ২০২১ সালে জাতীয় উৎপাদনশীলতা এবং গুণমানের শ্রেষ্ঠত্ব পুরস্কারের জন্য ভূষিত হয়েছেন, ২০১৪ সালে এনসিআর করপোরেশন থেকে ডিস্টিংশনের জন্য পার্টনার অ্যাওয়ার্ডের জন্য ভূষিত হন, ২০১১ সালে এনসিআর করপোরেশন থেকে সার্কেল অফ ডিস্টিংশনের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন, ২০১০ সালে এনসিআর করপোরেশন থেকে মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকা (এমইএ) অঞ্চলে এনসিআই এটিএম-এর জন্য ২য় বৃহত্তম পরিবেশক হিসাবে পুরস্কৃত হয়।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ সামাজিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। তিনি ২০২২ সাল থেকে বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য। ২০২০ সাল থেকে ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত ধোপাডাঙ্গা এমএল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও তিনি ২০১৬ সালে দেবনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জমি দান করেন। ২০১৩ সাল থেকে তিনি সুদর্শন ইন্টারন্যাশনাল কিন্ডার গার্র্টেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
সেই সঙ্গে তিনি ভারত বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ক্লাবের সহ-সভাপতি, ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেডের পরিচালক, বনানী ক্লাব লিমিটেডের সদস্য, সদস্য-অল কমিউনিটি ক্লাব লিমিটেড, সদস্য-ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতি, সদস্য-ফরিদপুর ফাউন্ডেশন, সদস্য-ফরিদপুর শিশু হাসপাতাল, সদস্য- ফরিদপুর হার্ট ফাউন্ডেশন। তিনি ধোপাডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির জন্য ৫০ শতাংশ জমি দান ও স্থাপনা নির্মাণের জন্য ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেন।